নিজেই সূর্যের দিকে ঘুরে বিদ্যুৎ তৈরী করবে এই বাড়ি
কলকাতা টাইমস :
ছাদের ওপর সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার চলছে বেশ কিছুকাল ধরে। কিন্তু বাড়ির বাইরের দেওয়াল বা জানালাও যদি সেই কাজে অংশ নেয়, তাহলে চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। স্থপতি রল্ফ ডিশ এই অভিনব বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বাড়িটি দিনে একবার নিজের অক্ষের ওপর পুরো ঘুরে যায়। ফলে সব সময়ই সূর্যের দিকে মুখ থাকে সেই বাড়ির। ফলে সেটি চাহিদার তুলনায় চার গুণ বেশি জ্বালানি উত্পাদন করে।
গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকেই রল্ফ ডিশ স্থপতি হিসেবে সৌরশক্তি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন। অনেক সমালোচক তাঁর স্বপ্নকে অবাস্তব মনে করতেন। কিন্তু মডেল বাড়ি তৈরি করে তিনি হাতেনাতে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে সেটি সত্যি সম্ভব। তিনি বলেন, ‘নিজেই কিছু করে দেখানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। অন্যের জন্য নির্মাণের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে নিজের জন্য বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে আরো ঝুঁকি নেওয়া যায়।
পরীক্ষামূলক বাড়ি হিসেবে আমরা হেলিওট্রপ তৈরি করেছি। পরিবেশসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতির চেষ্টা করেছি।’
সমালোচকদের মুখ এর মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ ফ্রাইবুর্গ শহরে ৬০টি বাড়ি নিয়ে একটি আস্ত সৌর বসতি তৈরি হয়েছে। প্রতিটি বাড়িই জ্বালানি উৎপাদন করে। ছাদে সোলার প্যানেলের সাহায্যে চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উত্পাদন করা হয়। অভিনব স্থাপত্য ও দক্ষিণমুখী অবস্থানের কারণে বাড়িগুলো গরম রাখার জন্য মাত্র এক-পঞ্চমাংশ জ্বালানির প্রয়োজন হয়। এমনকি একটি গোটা বাণিজ্যিক ভবনও ‘প্লাস এনার্জি হাউস’ হয়ে উঠেছে। একেবারে নতুন ধরনের বহিঃকাঠামোর ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।
ভ্যাকুয়াম প্লেট দিয়ে বাইরের দেয়াল মুড়ে দেওয়া হয়েছে, যার ইনসুলেশন ক্ষমতার ফলে বেশি উত্তাপ প্রবেশ করতে পারে না। তা ছাড়া এটি প্রচলিত উপকরণের তুলনায় এক-দশমাংশ পাতলা। বাড়ির রঙিন খোলসের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে আসল রহস্য। এক অভিনব ভেন্টিলেশন সিস্টেমের দৌলতে ইলেকট্রিক শক্তিচালিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজনই হয় না। রাতে শীতল বাতাস ভেতরে প্রবেশ করে। দিনের বেলায় ব্যবহৃত বাতাস বাইরে বের করে দেওয়া হয়। এক রেকিউপারেটর গ্রীষ্মে বাতাস শীতল করে এবং শীতে উত্তাপ দেয়।
সর্বশেষ আইডিয়া হলো আংশিক স্বচ্ছ জানালার কাচ তৈরি করা, যার মধ্যে সোলার প্যানেল বসানো থাকবে। অথচ সেই জানালা দিয়ে বিনা বাধায় বাইরের দৃশ্য দেখা যাবে। বিশেষ ধরনের পর্দার সাহায্যে সেই কাচ একদিকে রোদের তাপ প্রতিরোধ করবে, অন্যদিকে সৌরশক্তি উত্পাদন করবে। বিশেষ করে, বড় আকারের অফিস ভবনের জন্য এমন ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।