বোঝো কাণ্ড, জামাইকে খুশি করতে হাজারও মানুষের জীবন নিজের চাকরি তুলে দিলেন তার হাতে
কলকাতা টাইমস :
মেয়ের সুখ বলে কথা, জামাই বাবাজীবনকে খুশি করতে তাই শেষমেশ ঝুঁকিটা নিয়েই ফেলেন রেলচালক শ্বশুরমশাই! কয়েক হাজার যাত্রীর নিরাপত্তার কথা ভুলে, জামাইয়ের হাতে ছেড়ে দেন প্যাসেঞ্জার ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ। কী, না জামাইয়ের আবদার, তা কি আর ফেলা যায়! সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি প্রস্তাবে।
ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে হরিয়ানার মধ্যে ১৭ কিলোমিটার রেলপথে ‘চালক’ ছিলেন তার জামাই। আর, তিনি, শ্বশুরমশাই খুব খুশি, কারণ জামাই যে উপভোগ করেছেন গোটা যাত্রাপথ। এমনকী সেই স্মৃতি ধরে রাখতে ভিডিও তুলে রাখা হয়।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করে ওই ট্রেনটির চালক সতীশ শ্রীবাস্তবকে। সেইসঙ্গে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) শ্বশুর শ্রীবাস্তব ছাড়াও জামাই আকাশ বনশালের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষ ৮ জুন এই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতের উত্তর পশ্চিম রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা তরুণ জৈন।
শ্বশুরের সঙ্গে আকাশ বানশালের এই ‘জয় রাইড’ ছিল ২০১৪-র ১৩ এপ্রিল। জানা গিয়েছে, আকাশ নিজেই কদিন আগে রেল দফতরে ট্রেন চালানোর সেই সিডিটি পাঠিয়েছিলেন। যার জেরে গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
হরিয়ানার রেওড়িতে বাড়ি শ্রীবাস্তবের। জামাই বনশাল থাকেন গুরগাঁওয়ের নরহেরা গ্রামে, একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানির সুপারভাইজার। জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জেরেই পরিকল্পিত ভাবেই গোটা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন আকাশ বানশাল, যাতে শ্বশুরকে উচিত শিক্ষা দেওয়া যায়। সেই পরিকল্পনা মতোই ইঞ্জিনে ওঠেন আকাশ। সঙ্গে নিয়ে যান তার এক বন্ধুকেও, যাকে দিয়ে ভিডিওটি তোলানো হয়। এর পর হঠাৎই আবদার করে বসেন ট্রেন চালাবেন। জামাইকে খুশি রাখতে রাজি হয়ে যান শ্রীবাস্তব। গোটাটাই যে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত, সেটা তার মাথায় আসেনি।
রেলওয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। আর কোনও চালকের একই ভুল করা উচিত নয় বলেই অভিমত তার। গোটা ঘটনাটিকে রেল কর্তৃপক্ষ যে হালকা ভাবে নিচ্ছে না, তা স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দেন ওই সিনিয়র আধিকারিক। তাঁর কথায়, এটা একটা স্পেশালইজড কাজ। এর জন্য আট বছর অভিজ্ঞতা থাকাটা জরুরি। রেলকর্মীর কোনও আত্মীয় চাইলেই এ ভাবে ট্রেন চালাতে পারেন না, বলেন ওই কর্মকর্তা।
রেল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হয়নি। এমনকী ট্রেনটির নামটা পর্যন্তও জানানো হয়নি।