ফুসফুসে তিন বছর ধরে এটি আটকে, জানত না কেউ
কলকাতা টাইমস :
তিন বছর আগে প্লাস্টিকের একটি টুকরা গিলে খেয়েছিল শিশুটি। তারপর থেকে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হতো। তবে সমস্যার কারণ জানা যাচ্ছিল না। শেষাবধি ছয় বছর বয়সে এসে অস্ত্রোপচার করে বের করা হলো সেই প্লাস্টিক!
ঘাটালের দাসপুরের শিশু রোহিত দলুই গত তিন বছর ধরে সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। বারবার ডাক্তার দেখিয়ে, ওষুধ খেয়ে সাময়িক সুস্থ হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হচ্ছিল না সে।
এ দিকে তিন বছর আগে রোহিত যখন প্লাস্টিকের টুকরা গিলে খেয়েছিল, তখন তার ছোট ভাই বাড়িতে জানিয়েছিল বড় ভাইয়ের কীর্তির কথা। কিন্তু সে ভাই খুব ছোট বলেই হোক, বা রোহিতের তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না বলেই হোক বিষয়টিতে তেমন গুরুত্ব দেয়নি রোহিতের পরিবার।
ওই ঘটনার পর থেকে তিন বছর ধরে রোহিতের নিঃশ্বাসের ও কাশির সমস্যার কারণ যে সেই প্লাস্টিক গিলে ফেলা, তা মাথাতেও আসেনি কারো। এমনকি এসএসকেএমে তাকে নিয়ে আসার পরেও, পরীক্ষা করে বিস্মিত হয়ে যান খোদ চিকিৎসকরাও!
পরীক্ষায় দেখা যায়, একটি প্লাস্টিকের টুকরা আটকে আছে রোহিতের ফুসফুসের ডান দিকে। ফলে তার ফুসফুসের ডান দিকটা কাজ করাই বন্ধ করে দিয়েছিল, যার জেরে সমস্যায় ভুগছিল রোহিত।
শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে, ফুসফুস কেটে, সেই প্লাস্টিকের টুকরাটি বের করেন ‘ইনস্টিটিউট অব ওটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি অ্যান্ড হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’ বিভাগের চিকিৎসকরা।
রোহিতের মা মানবী দলুই জানান, স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে অনেকবার নিয়ে গেলেও তারা কেউ-ই রোগ ধরতে পারেননি। তারাও কখনোই কোনো চিকিৎসককে জানাননি প্লাস্টিক গিলে ফেলার কথা। কারণ তারা বিষয়টিতে তেমন গুরুত্বই দেননি। কারণ তারা বিশ্বাসই করেননি রোহিতের ভাইয়ের কথা। মাত্র বছর দুয়েক বয়স তার তখন, সবে কথা বলতে শিখেছে। ওই ধরনের কত কথাই তো বলে সে।
কিন্তু তার পর থেকে প্রায়ই অসুস্থ থাকে ছেলে। কিছুতেই কাশি কমছিল না। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পাঁশকুড়ার এক চিকিৎসককে দেখালে তিনি কলকাতার কোনো হাসপাতালে রোহিতকে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।