November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

এই রোগের টিকা নেওয়া থাকলে করোনার ঝুঁকি কম!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

রোনার মহামারির মৃত্যুগ্রাসে অসহায় বন্দি মানুষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সাধারণ কোন ফ্লু ভাইরাস নয়, জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত এই ভাইরাস নিজের চরিত্রই বদলে ফেলছে। এত বেশি নিজেকে বদলাচ্ছে এই ভাইরাস যে এর মতিগতি বোঝাই অসম্ভব হয় পড়ছে বিশ্বের বাঘা বাঘা ভাইরোলজিস্টদের কাছে। সংক্রমণ রোখার ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়াও তাই বিলম্বিত হচ্ছে।

তবে আশার আলো এটাই যে, বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের গবেষকরা শতাব্দী প্রাচীন যক্ষ্মার ভ্যাকসিন পরীক্ষা করে দেখছেন যে এটি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারে। বাংলাদেশে যক্ষ্মার ওই ভ্যাকসিন যার নাম বিসিজি টিকা, এটা খুব ভালোভাবে দেওয়া হয়। সব শিশু যাতে এই টিকা পায় সে জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাও বেশ প্রশংসনীয়।

বিসিজি বা ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন নামের এই টিকা ১৯২০ সালের দিকে প্রথম তৈরি করা হয়। এখন অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের কিছু দেশ এটির ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে দেখতে চাচ্ছে যে, এটি সত্যিই কোভিড-১৯ এর উপসর্গের বিস্তার ও তীব্রতা হ্রাসে সাহায্য করতে পারে কিনা।

মার্কিন সাময়িকী টাইম এ নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অবস্থিত মাডক চিলড্রেন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এমসিআরআই) গবেষকরা দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালের চার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে তালিকাভূক্ত করে এ নিয়ে বর্তমানে একটি গবেষণা করছেন।

এমসিআরআই’র পরিচালক অধ্যাপক ক্যাথরিন নর্থ বলেছেন, ‘ক্লিনিকাল এই ট্রায়ালটি কোভিড-১৯ এর উপসর্গের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা যথাযথভাবে পরীক্ষা করার অনুমতি দেবে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করতে পারে।’

তবে শুধু অস্ট্রেলিয়ায় নয় জার্মানিতেও এ নিয়ে বড় ধরনের গবেষণা চলছে। তারা এই গবেষণায় বয়স্ক রোগীসহ বিভিন্ন হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের অন্তভূর্ক্ত করছে। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস এবং গ্রিসও এমন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করার কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া যারা জীবনে একবার বিসিজি টিকা নিয়েছেন তারা এই রোগটি প্রতিরোধ করতে পারে বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির কলেজ অব অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিনের এক গবেষণায় জানানো হয়েছে।

নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির কলেজ অব অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিন বলছে, যেসব দেশে বিসিজি টিকাদান কর্মসূচি নেই- যেমন ইতালি, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র; এসব দেশে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে টিকাদান কর্মসূচি যেখানে আছে; সেখানে করোনায় আক্রান্তের প্রবণতা কম।

নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির কলেজ অব অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. গঞ্জালো ওটাজু বলেন, ‘বিসিজি নামের এই ভ্যাকসিন যে মানুষের রোগ প্রতিরোধের জন্য অনেকে ক্ষেত্রে বেশ উপকারী তার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, গিনি-বিসাউতে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিসিজির মাধ্যমে টিকা দেয়া শিশুদের সামগ্রিক মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে; যা শ্বাসকষ্টের সংক্রমণ এবং সেপসিস হ্রাসে ভ্যাকসিনের প্রভাবের কারণেই হয়েছে।’

গবেষকদের আশা, করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগের কোনো প্রতিষেধক তৈরির আগ পর্যন্ত বিসিজি ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের সামগ্রিক প্রভাব কমাতে পারে।

Related Posts

Leave a Reply