এই গানটি শোনামাত্রই আত্মহত্যা করেছেন ১০০ জনেরও বেশি, জানেন কি সেই গান?
কলকাতা টাইমস :
কোনও মনগড়া গল্প নয়। এ একেবারে ঘোর বাস্তব। এই গানটি আক্ষরিক অর্থেই ‘খুনি’ গান। শোনা গেছে এই গানটি শুনে একশো জনেরও বেশি আত্মহত্যা করেছেন। আসুন, জানা যাক সেই গানের ব্যাপারে।
একটি গান আপনার মন খারাপ করিয়ে দিতে পারে। আপনাকে হয়তো ডুবিয়ে দিতে পারে হতাশার সমুদ্রে। কিন্তু মেরে ফেলবে? শুনে অসম্ভব মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তব কখনও কল্পনার সুদূরতম গণ্ডিকে অনায়াসে অতিক্রম করে যায়। এ যেন তেমনই ব্যাপার। গানটির নাম ‘‘গ্লুমি সানডে’’।
তবে যাঁরা জানেন, তাঁরা এই গানটিকে ‘‘হাঙ্গেরিয়ান সুইসাইড সং’’ হিসেবেও চেনেন। হাঙ্গেরির পিয়ানোবাদক রেজসো সেরেস ১৯৩৩ সালে এই গানটিতে সুর দিয়েছিলেন এবং গেয়েছিলেন।
এই গানটি ঘিরে রয়েছে বহু মিথ। যেমন এক মহিলার কথা শোনা যায় যিনি গানটি প্লেয়ারে চালিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। এক দোকানদারের সুইসাইড নোটে পাওয়া গিয়েছিল এই গানের কথাগুলি। এমন নানা ঘটনায় আবৃত একটি গান, যা চালানোর আগে অনেকেই দ্বিতীবার ভাবেন।
গানটি সেরেস সুর দিয়েছিলেন এমন একটি সময়ে, যখন পেট চালাতে তিনি মরিয়া লড়াই চালাচ্ছেন। এই গানটির নেপথ্যে একটি গল্প রয়েছে। সেরেসের পকেটে তখন কানাকড়ি নেই। কী করে একবেলার খাবার জুটবে, সেই চিন্তা গ্রাস করেছে তাঁকে। এর উপরে বান্ধবীও ছেড়ে গিয়েছেন। এই অবস্থায় সেরেসের হাতে আসে গানটি। লিখেছিলেন তাঁর বন্ধু, কবি লাজলো জ্যাভর।
অনেকে বলেন, সেরেসের কষ্ট জ্যাভর অনুধাবন করেছিলেন। অন্য ব্যাখ্যায় বলা হয়, জ্যাভরের বান্ধবীই তাঁকে ত্যাগ করেছিলেন। তৃতীয় ব্যাখ্যায় বলা হয়, মূল কবিতাটি নেমে এসেছিল সেরেসের কলম বেয়েই। সেটিকে অদলবদল করে গানের আকার দেন জ্যাভর।
এবারে প্রশ্ন, সত্যিই কি এই গান আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়? এই গানটি রেকর্ড করেছিলেন প্যাল ক্যামার। সেই রেকর্ডিং প্রকাশিত হওয়ার পরেই হাঙ্গেরিতে পরপর আত্মহত্যা ঘটতে থাকে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং পুলিশের কাছে তথ্য একত্র করলে দেখা যাবে, হাঙ্গেরি এবং আমেরিকায় সেই সময়ে অন্তত ১৯টি আত্মহত্যার সঙ্গে এই গানটির যোগসূত্র ছিল। গানটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৬৮ সালে ঘরের জানলা দিয়ে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেন সেরেস নিজে।
এখানেই দাঁড়ি পড়েনি আত্মহত্যায়। এর পরেও খবর আসতে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। জার্মানি, ইংল্যান্ড, হাঙ্গেরি সর্বত্র আত্মহত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যায় গানটি।