জল্পনাই সত্যি, বিষ খাওয়ানোতেই কোমায় পুতিনবিরোধী নাভালনি
কলকাতা টাইমস :
এবার জল্পনাই সত্যি হল। ক্রেমলিনের কড়া সমালোচক, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে যে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল, তা নিশ্চিত করে দিলেন জার্মানির বার্লিনের চিকিৎসকরা।
তবে কোন ধরনের বিষ তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল, তা এখনও অজানা। পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। এখনও নাভালনির শারীরিক অবস্থা গুরুতর। যদিও চিকিৎসকরা আশ্বাস দিয়েছেন, তার জীবন সংশয় নেই।
গত ২০ আগস্ট সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তার চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে।চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল।
এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নেওয়া হয় তাকে। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন।
তবে ঠিক কোন রাসায়নিক তার চায়ে মেশানো হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত নয়। চিকিৎসকদের ধারণা, কোলিনেস্টেরাস নামে এক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়। কারণ, এই বিশেষ ধরনের এনজাইম সরাসরি মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্ট ও টক্সিকোলজি বিভাগের অধ্যাপক অ্যালেস্টার হে’র কথায়, “এর প্রভাবে প্রথমে শ্বাসকষ্ট এবং তারপর পেশির সংকোচন-প্রসারণ বন্ধ হয়ে গোটা শরীর শক্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কেউ। ততক্ষণে তা স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলতে শুরু করে।” ঠিক যেমনটা হয়েছিল নাভালনির ক্ষেত্রে।
যদিও পুতিনবিরোধী এই নেতার ওপর বিষপ্রয়োগের চেষ্টা এবারই প্রথম নয়, আগেও হয়েছে। ২০১১ সালে ‘অ্যান্টি-করাপশন ফাইন্ডেশন’ নামের একটি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন নাভালনি। রুশ প্রশাসনে ভয়ানক দুর্নীতি তথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে তার সংস্থা।
বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাভাবিকভাবেই শাসনতন্ত্রের নিশানায় রয়েছেন নাভালনি। গত বছর জুলাইয়ে পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় ভয়ঙ্কর অ্যালার্জি হয়েছিল তার। নাভালনির সন্দেহ ছিল, বিষক্রিয়াতেই এসব হয়েছিল। তবে এবারের অসুস্থতার কারণ যে একমাত্র বিষ, বার্লিনের চিকিৎসকরা তা নিশ্চিত করায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।