দেওয়ালের ওপারে থাকা বস্তুকেও এখন দেখে ফেলা যাবে দিল্লির এই যুবকের কল্যানে!
কলকাতা টাইমসঃ
দেওয়ালের ওপাশে কী আছে সেটা দেয়াল পাড় না করে জানা যায় না। এবার দিল্লির এক যুবকের আবিষ্কার মানুষকে দেওয়ালের ওপার দেখার চিরন্তন বাধা থেকে মুক্ত করতে চলেছে। উৎকৃষ্ট গুপ্তা নামের ওই যুবক জানান, ইট বা কংক্রিটের দেয়ালের ওপাশে কী আছে তা সরাসরি দেখতে পাওয়া এখন আর কল্পনা নয়, বাস্তব হতে চলেছে।
যদি সত্যি এমন হয়ে থাকে, তবে বলা যায়, এমন আবিষ্কার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সারা ফেলে দেবে বিশেষ করে সন্ত্রাস কবলিত দেশসমূহ বা নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে বিষয়টিতে। এমন বিষয় নিয়ে দুনিয়াজুড়ে অনেক গবেষকই কাজ করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। এক্সরে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এক্ষেত্রে সাফল্য পেতে চেয়েছেন কেউ কেউ। এই আবিষ্কার ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযানে, জঙ্গি অভিযানে কিংবা দুর্গম স্থানে মূল্যবান বস্তুর সন্ধানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রযুক্তি আগামী ১০ বছরের মধ্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে বলে মনে করছেন আবিষ্কর্তা। তার দাবি, দেয়ালের ওপারে কোনো মানুষ বা জন্তুর অবস্থান চলাফেরা তথা তার আকার আকৃতি এখন সহজেই দেখা যাবে। এটা সম্ভব করবে নতুন আবিষ্কৃত এক লেজার প্রজুক্তি। মোটামুটি নির্ভুলভাবে দেয়ালের ওপাশে লুকিয়ে থাকা বস্তু বিশেষ করে মানুষকে সনাক্ত করবে এটা।
জানা যায়, উৎকৃষ্ট গুগল আর লিংকডিন-এর মতো প্রতিষ্ঠানেও চাকরি করেছেন উৎকৃষ্ট। ২০১৩ সালের মে থেকে ২০১৪-এর আগস্ট পর্যন্ত গুগলে সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে কাজ করেন। একই পদে জুন ২০১২ থেকে মে ২০১৩ পর্যন্ত কাজ করেন লিংকডিনে। এই দুই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্যত্র তিনি ডেটাবেজ ইনভেস্টিগেশন, গ্রাহকদের সতর্কবার্তা প্রেরণ, ক্রোমকাস্ট, সার্ভার বার্তা সহ বিভিন্ন কাজে সাফল্য দেখান।
ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ছাত্র উৎকৃষ্ট গুপ্ত। বয়স ৩০ বছর। দিল্লির গাজিয়াবাদ জেলার লোহিয়া নগরের বাসিন্দা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে সদ্য পিএইচডি করেছেন উৎকৃষ্ট। আলোক কণা ফোটনের ইরেক্টিভ বিহেভিয়ার নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলেন অনেকদিন যাবত। কোনো বস্তুর বাধা পেলে বা তার সঙ্গে সংঘর্ষ হলে ফোটন কণাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছোটাছুটি করতে থাকে।
এর থেকেই ধারণা করা হয়, এই ছোটছুটির গতিবেগ আর দিক নিয়ন্ত্রণ করে তথা অ্যাডভান্স অপ্টিকসের সঙ্গে এর সংযোজন করে নিরেট দেয়ালের ওপারে থাকা বস্তুর ত্রি-মাত্রিক ইমেজ তৈরি করা সম্ভব। তিনি এখন থ্রিডি প্রজেক্টিভ ডিসপ্লের জন্য অ্যালগরিদম ডিজাইন নিয়ে কাজ করছেন বলে জানায় ওই যুবক। তবে এ ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন মানুষের প্রাইভেসিকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে, এই বিষয়েও নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।