November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular সফর

এই ‘মৃত্যুপুরী’-র জল পশু-প্রাণীদের বানিয়ে দেয় ‘জীবন্ত মমি’

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

ফ্রিকার তাঞ্জানিয়া-কেনিয়ার সীমান্তে প্রত্যন্ত প্রান্তর। দিগন্ত জুড়ে শুয়ে আছে টকটকে লাল জমি। রং যেন রক্তকেও হার মানায়। জমি থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসা আলোতে ধাঁধিয়ে যায় চোখ। কিন্তু ওটা কোনও জমি নয়। বরং হ্রদ। অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার জন্য যার রং লাল। প্রচুর পরিমাণে সোডা আর লবণ থাকায় তার জল এতটাই কষ্টিক, সংস্পর্শে প্রস্তরীভূত হয়ে যাচ্ছে প্রাণীরা। মৃত্যুপুরী এই হ্রদের নাম নাট্রোন।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন হ্রদের জলে চারপাশের পাহাড় থেকে এসে জমা হয় প্রচুর ব্যাকটেরিয়া। পাশাপাশি আছে জলে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষার। যার মূল উৎস সোডিয়াম কার্বোনেট। পানির Ph Balance ১০.৫। নাট্রোন হ্রদের ধার বরাবর হেঁটে গিয়েছেন ফোটোগ্রাফার নিক ব্রান্ডট। তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ফসিল হয়ে যাওয়া একের পর এক পাখি এবং অন্য জীবজন্তু।

সোডিয়াম ব্যবহার করা হত প্রাচীন মিশরে। মৃতদেহ মমি করার জন্য। সেই উপাদানের জন্য এখানেও সংরক্ষিত হয়ে থাকছে প্রাণী-দেহ। বিকৃত হচ্ছে না চেহারা। শুধু রক্ত মাংসের বদলে সে তখন পাথরের। অতিরিক্ত ক্ষারের প্রভাবে পুড়ে যাচ্ছে কিছু প্রাণীর চোখ আর চামড়া। তবে কীভাবে এবং কেন প্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে সে নিয়ে এখনও সম্যক ধারনা নেই বিজ্ঞানীদের। সেটা এখনও রহস্যই।

কিন্তু শুধু মৃত্যুফাঁদ নয়। এই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে বাস্তুতন্ত্রে। কারণ এই হ্রদ এবং সংলগ্ন এলাকা বিলুপ্তপ্রায় লেজার ফ্লেমিঙ্গোদের ব্রিডিং প্লেস। ওই জলে থাকা ব্যাকটেরিয়াই এই পাখিদের প্রধান খাদ্য। তাছাড়া এই লোহিত হ্রদের থাকা জীবাণু-বৈচিত্রও পৃথিবীতে বিরল। কিন্তু এই একই হ্রদের জল প্রায়শই মরণফাঁদ হয়ে যাচ্ছে পশুপ্রাণীর কাছে। তখন এই জলাশয়ের পানি এতটাই ক্ষারকীয় হয়ে পড়ছে তা বিপজ্জনক ভাবে ঝলসে দিচ্ছে প্রাণীদের। প্রাকৃতিক এই রহস্য এখনও কিনারা করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।

তাঞ্জানিয়ার এই হ্রদের জল তীব্র গরম। স্বাভাবিক উষ্ণতা প্রায় ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। বুকের মধ্যে রক্তবর্ণ বিষ-পানি আর প্রাণীদের পাথর-দেহ নিয়ে শুয়ে আছে প্রকৃতির মেডুসা‚ লেক নাট্রোন।

Related Posts

Leave a Reply