কথা বলার মতো কেউ নেই এই দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের
কলকাতা টাইমস :
ব্রিটিশ রেড ক্রসের এক গবেষণা অনুযায়ী ব্রিটেনে লাখ লাখ মানুষ একাকীত্ব কিংবা সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় ভুগছেন। যাদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় চার হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বলেছেন তাদের কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু নেই। আবার এক-তৃতীয়াংশ এও বলছেন- কথা বলার মতো কেউ নেই বলে প্রায়শই তারা একা বোধ করেন।
যদিও অনেকে মনে করেন একাকীত্বের মতো বিষয়টি আসলে বয়স্কদের ওপরই প্রভাব ফেলে কিন্তু এই গবেষণা বলছে তরুণ প্রাপ্তবয়স্করাও এখন এ ধরণের সমস্যা অনুভব করেন।
হ্যাজেল নামে একজন বলেছেন, তিনি নতুন একটি এলাকায় আসার পর অন্তত তিন বছর কোনো বন্ধু তৈরি করতে পারেননি। মাত্র বিশ বছর বয়সে বার্মিংহামে বড় হওয়া এ তরুণী অন্য একটি এলাকায় যান যেখানে তার স্বামী বাস করেন।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন বন্ধু তৈরি করা সহজ কিন্তু আমি আসলে অনেক লড়াই করেছি। সবসময়ই এটা কঠিন মনে হয়েছে আমার কাছে। শৈশবে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে আমাকে। আমি আসলে আমার সহোদরদের মতো ছিলাম না এবং সামাজিকভাবে মেশার বিষয়গুলো আমি ততটা শিখে উঠতে পারিনি।’
হ্যাজেল মনে করেন, কিছু মানুষের মধ্যে এ বিষয়গুলো আসলে প্রাকৃতিকভাবে হয়ে ওঠে আর কিছু মানুষকে সংগ্রাম করতে হয়।
হ্যাজেল বিষয়গুলো নিয়ে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান আসেনি। তিনি বলেন, ‘মানুষকে বিশ্বাস করাই কঠিন হয়ে উঠেছিল। ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো হারাতে শুরু করলে আপনি আসলে আত্মবিশ্বাসটাই হারাতে শুরু করবেন।’
সবসময় এক ধরনের উদ্বেগের মধ্যে থাকতেন তিনি কিন্তু কখনোই চিকিৎসকের কাছে যাননি। পরে অবশ্য তিনি যখন গর্ভবতী হয়ে পড়েন তখন এ অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। মাতৃত্ব তাকে একাকীত্বের চক্র ভাঙতে সহায়তা করেছে।
আবার সিমোনা ভারানিউট যখন লিথুনিয়া থেকে বেলফাস্টে যান এবং প্রথম ছয় মাস তার ভালোই কেটেছে জানিয়ে বলেন, ‘এটাই ছিল আমার প্রথম কোনো দেশে যাওয়া। আমি ভাবলাম এসেছি এবং কয়েক সপ্তাহ থেকে বাড়ি ফিরে যাব। বিষয়টা আমি পছন্দ করেছিলাম। তবে একাকীত্ব বিষয়টা অনুভব করেছিলাম পরে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেখানে থাকতাম সেখানকার লোকজন বন্ধুবৎসল। কিন্তু ঠিক বিশ্বাস করার মতো নয়। আর আমার ছেলে জন্ম নেয়ার পর এটা আরও কঠিন হয়ে যায়। দিনের লম্বা সময়টা কাটানো ততটা সহজ ছিল না। মনে হতো চার দেয়ালের মধ্যে আটকে আছি। তবে ছেলের সঙ্গে সময়টা দারুণ কেটে আমার।
পরে চ্যারিটি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হলে একটি কমিউনিটির সাথে তার যোগসূত্র গড়ে উঠে। তার পরামর্শ হলো, কোনো নতুন পরিবেশে ভয় পাওয়া বা সাহায্য চাইতে লজ্জিত হওয়া উচিত নয়।