November 12, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ওপার বাংলা রোজনামচা

স্কুল সেটা আবার কি ? 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

এখানকার শিশুদের যদি জিগেশ করা হয় স্কুল যায়? উত্তর দেওয়ার বদলে তারাই উল্টে প্রশ্ন করবে স্কুল সেটা আবার কি ? এমনি হাল বাংলাদেশের চরফ্যাশন ভোলার মনপুরার ঢালচরের কয়েক হাজার শিশুর।শিক্ষাবঞ্চিত। দ্বীপের ছেলেমেয়েদের অনেকেই জানে না স্কুলে কী হয়। শিশুদের বয়স ৬-৭ বছর পেরোতেই কাজে বেরিয়ে পড়তে হয়। ছোটবেলা থেকেই কর্মজীবন শুরু হয়। নিজের অজান্তেই জীবন থেকে শিক্ষার অংশটা ঝরে যায়।

ঢালচরে সরেজমিন ঘুরে অসংখ্য কর্মজীবী শিশুর দেখা মেলে। ওদের জীবনে অবসর বলতে কিছু নেই। জল টানা, মাঠে গরু-মহিষ চড়ানো, নৌকায় মাছ ধরা, ফসলের মাঠে শ্রম দেয়াসহ ওদের হাতে অনেক কাজ। চারদিকে নদীবেষ্টিত ঢালচরের শিশুদের লেখাপড়ার কোনো সুযোগ আজও গড়ে ওঠেনি। হাইস্কুল তো দূরের কথা, প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত নেই। ফলে চরের ৬ শতাধিক শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত।

১৩ বছরের কিশোর হাছান বড় হয়ে র‌্যাবে চাকরি করতে চায়। সে জলদস্যুদের হাত থেকে চরবাসীকে রক্ষা করতে চায়। ১২ বছরের বাবু স্বপ্ন দেখে পুলিশের বড় অফিসার হওয়ার। ১৩ বছরের কিশোরী সুরমা বেগমের স্বপ্ন ডাক্তার হয়ে চরবাসীর সেবা করার।
কিন্তু এসব স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে শিশুদের বই হাতে স্কুলে যাওয়ার কথা। কিন্তু ঘটছে উল্টোটা। ওদের কেউ নদীতে মাছ ধরছে, কেউ মহিষ-গরুর রাখালের কাজে নিয়োজিত। অন্যদিকে সুরমা, আয়শার মতো মেয়েরা বাড়িতে মায়ের কাজে সাহায্য করছে। কখনো বাইরের কাজেও যেতে হচ্ছে।

চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ১৯৫৬ সালে সরকারের কাছ থেকে গ্রহণ করলেও মূলত ২০০০ সাল থেকে বসবাস শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে নদীভাঙনের শিকার আশ্রয়হীন মানুষ এ চরে বসতি গড়ে। সেখানকার মানুষ চরের খাসজমিতে আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে চরবাসীর অন্যান্য সংকটের পাশাপাশি শিক্ষা সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চরে তিন হাজার মানুষ বসবাস করে। এদের মধ্যে প্রায় ছয় শতাধিক শিশুও রয়েছে। কিন্তু শিশুদের শিক্ষার জন্য কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এর ফলে হাছান, বাবু, সুরমা, মনি, খাদিজা, পলি, সজিব, ইমাম, রাকিবদের মতো সহস্র্রাধিক শিশুর স্বপ্ন অঙ্কুরেই মারা যাচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply