ওরা বিশ্বাস করে না, কিন্তু সুখ খুঁজে নিতে পারে’
এ সময়ের তরুণ প্রজন্ম সত্যিকার অর্থেই বড় জটিল প্রাণী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বহু গবেষণার পর বোঝা গেছে, এরা রোমান্স আর বন্ধুত্বকে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা করতে হিমশিম খায়। এ কাজে দক্ষ নয় তারা। সম্প্রতি এক গ্লোবাল জরিপে দেখা গেছে, আধুনিক তরুণ প্রজন্ম অন্যদের ওপর বিশ্বাস আনতে পারে না। বিশেষ করে রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতাদের ওপর বিশ্বাস আনতে মোটেও আগ্রহী নয় তারা। তবে যেকোনো উপায়েই হোক তারা জীবনের সুখ খুঁজে নিতে পারে।
আমেরিকার মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ভায়াকম বিভিন্ন তারুণ্য-নির্ভর চ্যানেল, যেমন এমটিভি এবং নিকোলোডিওন এবং হলিউডের স্টুডিও প্যারামাউন্টের মাধ্যমে ২৮৬০০ জনের মতামত গ্রহণ করে অনলাইনে। বিশ্বের ৩০টি দেশ থেকে তারা সমীক্ষায় অংশ নেন।
বর্তমানে সময়ের উত্তাল রাজনৈতিক অবস্থা আর ধর্ম-ভিত্তিক সংঘাতের পরিস্থিতিতে আসলে তাদের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেছে। জরিপকারীদের ৯ শতাংশ ধর্মীয় নেতাদের ওপর কোনো বিশ্বাস আনতে পারেন না বলে জানিয়েছেন। ২ শতাংশ রাজনীতিবিদদের ওপর কোনো আস্থা রাখেন না। একই ধরনের জরিপ ২০১২ সালে করা হয়েছিল। তখন জরিপের অংশ নেওয়াদের ৩৩ শতাংশ ধর্মীয় নেতাদের বিশ্বাস করতেন। কিন্তু সে অবস্থার পতন ঘটেছে। আর রাজনীতিবিদদের পাশে ছিলেন ২৫ শতাংশ। অংশ নেওয়াদের বয়স ৩০ এবং তারও কম।
জরিপে দেখা গেছে, দেশভেদে মানুষের মতামতেও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- নাইজেরিয়াতে ধর্মীয় নেতাদের ওপর বিশ্বাস এনেছেন ৩২ শতাং মানুষ। কিন্তু চিকিৎসক, শিক্ষক আর বন্ধুদের ওপর বিশ্বাস কমেছে অনেক। তবে তারা অন্য কোনো উপায়ে ব্যক্তিগত সুখ সন্ধান করে নেন।
ভায়াকমের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান কার্জ বলেন, গোটা বিষয়টা বেশ জটিল। এ প্রজন্ম অন্যদের ওপর বিশ্বাস আনতে নারাজ। সুখের সময় বলতে অংশগ্রহণকারীরা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর কথা বলেছেন। তবে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছুটি-ছাটা আর আনন্দ উৎযাপনকেই সুখকর মুহূর্ত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির সংকটপূর্ণ অবস্থার কারণে মানুষ আসলে নিজের কাছে ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ছে। যখন আপনার সামনে পছন্দসই পথ থাকে না, তখন এমন কিছুতে নজর যায় যা অন্তত নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তখন আপনি সেই মানুষগুলোর সঙ্গেই সময় কাটাতে চান, যাদের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, বলেন কার্জ।
এক গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ভারতীয়দের তিন-চতুর্থাংশ বিনোদন পেতে নিজ কক্ষে একাই নাচানাচি করেন। আর জাপানিদের ২৭ শতাংশ একাকী সময় কাটান।