November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

নিজেদেরকেই খেয়ে জীবন বাঁচায় তারা

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

প্রাণীদের মধ্যে ক্যানিবলিজম বা নিজেদের প্রজাতির মাংস খেয়ে জীবনধারণ করা নতুন নয়। কিছু প্রজাতির মাকড়সা, টাইগার স্যালামান্ডারের মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক পিঁপড়ের কলোনির খোঁজ পেয়েছেন, যারা প্রকৃত অর্থে ক্যানিবল অর্থাত্ স্বপ্রজাতির মাংসভোগী নয়, কিন্তু খাদ্যের অভাবে এবং বেঁচে থাকার জন্য নিজেদেরকেই খেয়ে ফেলছে তারা। অর্থাত্ সম্পূর্ণ অন্য এক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অভিযোজন ঘটেছে তাদের মধ্যে।

পোল্যান্ডে নিউক্লিয়ার বাঙ্কারের ভেতর বিজ্ঞানীরা এই জাতীয় পিঁপড়ের খোঁজ পেয়েছেন। সম্প্রতি জার্নাল অব হাইমেনোপটেরা রিসার্চ-এ বিজ্ঞানীদের এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা তাদের নাম দিয়েছেন রাক্ষস পিঁপড়ে। দু’টি উড অ্যান্ট কলোনির কাহিনি এটা। একটা কলোনি তৈরি হয়েছে রানি পিঁপড়েকে ঘিরে আর অন্য কলোনি তৈরি হয়েছে খাদ্যের অভাবকে ঘিরে। পরে তারাই রাক্ষস পিঁপড়েতে পরিণত হয়েছে।

নিউক্লিয়ার বাঙ্কারে একটি পাইপের মধ্যে রয়েছে এই উড অ্যান্ট কলোনি। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটাই আসল কলোনি। কারণ এই কলোনিতেই রানি পিঁপড়ে থাকে। কিন্তু খাদ্যের সন্ধানে কলোনির শ্রমিক বা কর্মী পিঁপড়েদের পাইপ থেকে বাইরে বের হতে হয়। ওই পাইপের কাছেই আরো একটি ভেন্টিলেশন পাইপ রয়েছে। দু’টি পাইপের অবস্থান এমনই যে, খাদ্যের সন্ধানে যাওয়ার সময় প্রতিদিন অনেক পিঁপড়ে ভেন্টিলেশন পাইপের মধ্যে পড়ে যায়। সেখান থেকে তারা আর নিজেদের কলোনিতে ফিরতে পারে না। আবার বাইরেও বের হতে পারে না। ফলে প্রতিদিন যে পিঁপড়ে খাদ্য খুঁজতে গিয়ে ভেন্টিলেশন পাইপে পড়ে যায় তারা মূল কলোনি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়।

নতুন কলোনির কোনো রানি নেই। সবাই শ্রমিক বা কর্মী পিঁপড়ে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বাইরে বের হতে না পারায় ওই কলোনি মধ্যে চূড়ান্ত খাদ্যের অভাব দেখা দেয়। দীর্ঘদিন খাদ্য না পেয়ে অনেক পিঁপড়ে মারা যায়। তখন ওই নতুন কলোনির অন্য পিঁপড়েরা মৃত পিঁপড়েদের খেয়ে জীবনধারণ করে। আবার অনেক সময় তাদের মধ্যে এতটাই খাদ্যাভাব দেখা যায় যে, পিঁপড়েরা নিজেদের মধ্যেই যুদ্ধ করতে শুরু করে। যুদ্ধে মৃত সৈনিকদের দেহ খেয়ে বাকিরা বেঁচে থাকে।

২০১৩ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথম এই কলোনির খোঁজ পান। তারপর তাদের জীবনধারণের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, মূল কলোনি থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া পিঁপড়েরা বাঁচার স্বার্থে কিভাবে স্বপ্রজাতিভুক হয়ে উঠেছে।

ভেন্টিলেশন পাইপের সঙ্গে মূল কলোনির পাইপের মধ্যে একটি কাঠের পাটাতন যোগ করে বিজ্ঞানীরা এও দেখেছেন। দীর্ঘদিন মূল কলোনি থেকে আলাদা থাকা পিঁপড়ের দল যখন ওই কাঠ বেয়ে মূল কলোনিতে পৌঁছায়, তখন তাদের স্বাগত জানানো হয়। তাদের আলাদা কলোনি বলে বিচার করে না পিঁপড়েরা এবং এতদিন যারা স্বপ্রজাতিভুক হয়ে উঠেছিল, মূল কলোনিতে ফিরে তারা আবার আগের মতোই ব্যবহার করে।

Related Posts

Leave a Reply