কাউকে রিল্যাক্স করতে বলার আগে দশবার ভাবুন
কলকাতা টাইমস :
বিষয়টি অনেকটা গোলকধাঁধার মতো। কেউ যখন মানসিকভাবে খুব বেশি চাপে থাকেন তখন তাকে বলা সবচেয়ে কম কার্যকর এবং সম্ভবত সবচেয়ে বিরক্তিকর কথাটি হলো, ‘রিল্যাক্স’।
এই কথাটি বেশির ভাগ লোকের ওপর ঠিক বিপরীত প্রভাবটিই ফেলে। যারা কোনো সহকর্মী, অধস্তন বা ভালোবাসার জনকে রিল্যাক্স করতে বলেন তারা হয়ত ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই তা বলেন। কিন্তু লোককে তাদের আবেগগত অবস্থা পরিবর্তনে আদেশ দেওয়ার বদলে বরং একটু ভিন্ন কৌশলে চেষ্টা করা উচিত।
আর আপনি যদি রিল্যাক্স করার আদেশ পান তাহলে নিজের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারেন।
ক্লাসিক্যারিয়ারগার্লডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা আন্না রুনইয়ান বেশ কয়েকবছর আগে তার আগের চাকরিতে কঠোর পরিশ্রম করছিলেন। এমন সময় একদিন তার বস এসে তাকে রিল্যাক্স করতে বললেন। সঙ্গে বললেন, ”আপনাকে যে একেবারে নিখুঁত হতে হবে তেমন কোনো কথা নেই।”
এ কথা শুনে রুনইয়ানের চেহারা রাগে লাল হয়ে যায়। তিনি বরং তার কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরুপ কোনো প্রশংসা বাক্য শুনতে চেয়েছিলেন। রুনইয়ান বলেন, ”আমি যা করছিলাম আমার বস সত্যিকার অর্থেই তা বুঝতে পারেননি। এতে আমিও মনে মনে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।” এরপর থেকে অবশ্য তিনি তার বসকে তার কাজের চাপ সম্পর্কে প্রায়ই হালানাগাদ রাখার চেষ্টা করে যান। তবে পরের বছরই তিনি কম্পানিটি ত্যাগ করেন।
সানফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেগের অধ্যাপক এবং মানসিক চাপ বিষয়ক গবেষক ওয়েন্ডি ম্যান্ডেস বলেন, ”আদেশের ভিত্তিতে রিল্যাক্স করা শারীরবৃত্তিকভাবেও সম্ভব নয় যদি দেহটি ইতিমধ্যেই তীব্রভাবে চাপে ভুগতে থাকে।” মানসিক চাপমুক্ত হয়ে দেহের রিল্যাক্সড অবস্থায় ফিরে যেতে অন্তত ২০ থেকে ৬০ মিনিট সময় লাগে।
অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো আবেগ লুকানো বা দমনের চেষ্টা করলে তাতে উল্টো ফল হয়। যখন লোককে তাদের অনুভূতি লুকাতে এবং আবেগ দমন করতে বলা হয় এতে বরং তা আরো বেড়ে যায়, বলেছেন ড. মেন্ডেস।
এ ধরনের মিস ফায়ার বরং বস ও কর্মীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি এবং গভীর বিভক্তির সৃষ্টি করে। ব্র্যান্ডন স্মিথ তার আগের এক চাকরিতে চরম মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হয়েছিলেন যখন তার বস চাকরিতে যোগদানের প্রথম দিনেই তাকে বেশ কিছু সহকর্মীকে ছাঁটাইয়ের আদেশ দেন। মি. ব্র্যান্ডন স্মিথ এখন আটলান্টার ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির অধ্যাপক।