যে ব্যাংকের মালিকও ভিক্ষুক, গ্রাহকও ভিক্ষুক!
কোলকাতা টাইমস :
তারা যে গরিব মানুষ, তাদের কথা কেউ ভাবে না। তাদের রুজি-রোজগার বাটিতে বা শাড়ির আঁচলে জমা হওয়া কিছু খুচরো পয়সা। সারা দিনের পর যোগ করলে হয়তো দিন শেষে এক মুঠো খাবার জোটে। কোনোদিন আবার সেটুকুও জোটে না। রাস্তায় তাদের দেখে পাশ কাটিয়ে যাওয়াই আমাদের রীতি হয়ে গেছে। কিন্তু তারাও যে ব্যাংকার বললে অত্যুক্তি হবে না। এমন ঘটনা ভারতে।
এটি সম্ভব হয়েছে ওই দেশেরই তথাকথিত পিছিয়ে পড়া রাজ্য বিহারে। কোনো মহানুভব সমাজ কর্মীর জন্য এমনটা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়েছে গুটি কয়েক ভিখারীর জন্যেই! শুনলে একটু গোলমেলে লাগার কতা কিন্তু গোলমেলে কিছুই নেই। যা আছে, সেই কথা শুনলে তাক লেগে যাবে কপালে।
বিহারের গয়া শহরে, একদল ভিখারী একসঙ্গে হয়ে খুলে ফেলেছেন তাদের নিজস্ব ব্যাংক। সেটা তারা নিজেরাই দেখভাল করেন এবং চালান। কোনো সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে যাতে সহ-ভিখারীদের অথৈ জলে পড়তে না হয়, তাই এ ব্যবস্থা। বছরের পর বছর ধরে গয়া শহরের মা মঙ্গলগৌরি মন্দিরের সামনে যেসব ভিখারী সাহায্যের আশায় হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, তারাই একত্রিত হয়ে এই অসাধ্য সাধন করেছেন। এই ব্যাংকের নামকরণ তারা করেছেন মঙ্গলা ব্যাংক।
যে ৪০ জন ভিখারী মিলে ব্যাংকটি তৈরি করেছেন, তাদের মধ্যে রাজকুমার মাঞ্ঝি খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। ব্যাংকের সব কর্মচারী, ম্যানেজার বা ট্রেজারার কিংবা সেক্রেটারি অথবা এজেন্ট সবাই ভিখারী।রাজকুমার মাঞ্ঝি-ই এই ব্যাংকের ম্যানেজার। না, তিনি একেবারেই অশিক্ষিত নন। ব্যাংকের প্রাথমিক অ্যাকাউন্টের কাজ চালাতে তিনি দিব্যি পারেন। প্রতিদিন প্রতি ভিখারী রোজগারের টাকা থেকে কুড়ি টাকা করে ব্যাংকে জমা রাখেন। সপ্তাহ শেষে তা গিয়ে দাঁড়ায় মাথাপিছু ১৪০ টাকায়!