১১০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার, রীতিমতো জমকালো বিজ্ঞাপন দিয়ে চাওয়া হলো ‘টিকটিকি’
১১০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো গোয়েন্দা নিয়োগে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিয়েছে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্স।সংস্থাটির প্রধান অ্যালেক্স ইয়ঙ্গার বলছেন, “আমরা এমন মানুষজনকে গোয়েন্দা হিসেবে যাই যারা জীবনে কখনো এমন পেশায় যাওয়ার কথা চিন্তাও করেন নি”
৩৬ সেকেন্ডের একটি বিজ্ঞাপন। শুরুটা দেখে মনে হবে যেন জেমস বন্ড সিনেমার কোন উত্তেজনাকর দৃশ্যের অবতারণা হতে যাচ্ছে।বিশাল আকৃতির হাঙর সাতরে বেড়াচ্ছে নীল রঙের পানিতে। রহস্যময় আবহসঙ্গীত শোনা যাচ্ছে।কিন্তু তারপর দেখা গেলো একজন নারী তার শিশুকে নিয়ে গেছেন লন্ডনের একটি অ্যাকুরিয়ামে।
বিজ্ঞাপনে এটাই বলার চেষ্টা করা হয় যে, “গুপ্তচর মানেই হাঙরের সামনে বাহাদুরি দেখানো নয়। আমরা গুপ্তচর, কিন্তু আমরা আপনাদের মতোই সাধারণ মানুষ”।
সিনেমায় যেভাবে দেখানো হয়, যেমন জেমস বন্ডের কথাই ধরুন।
ঠাণ্ডা মেজাজের এক সুপুরুষ, দারুণ পোশাকে বিশ্বের সবচাইতে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি আর অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হচ্ছেন ভিলেনের।
গোপনে তার কার্যক্রম রক্ষা করলো পৃথিবীকে। বা তার কারণে বদলে গেলো পৃথিবীর গতি ইত্যাদি।
সিনেমার কারণে গোয়েন্দা শব্দটির সাথে যে রোমাঞ্চকর অনুভূতি জড়িয়ে রয়েছে সেজন্য হয়ত বহু মানুষ এই পেশায় যোগ দিতে চান।
কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি ব্রিটেনের একটি নিরিবিলি শহরে রাশিয়ান একজন সাবেক গুপ্তচর ও তার মেয়েকে নার্ভ গ্যাস দিয়ে হত্যা চেষ্টার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে সেখানে এমআইসিক্সে চাকুরীতে আবেদনের পরিমাণ ব্যাপক বেড়ে গেছে।
তবে তারা বলছেন, জেমস বন্ড হয়ে উঠতে চাইলে হবে না। তারা একজন সফল গুপ্তচরের খোঁজ আরো বিস্তৃত করবেন।
বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘুদের আকৃষ্ট করতে চাইছে এমআইসিক্স।কারণ সর্বশেষ ২০১৬ সালের তথ্যমতে সংস্থাটিতে কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান বংশোদ্ভূত মানুষজন এবং নারীদের সংখ্যা খুব কম। পেশার কথা যখন ওঠে তখন এর বেতন ভাতা একটা বড় বিষয়।
ব্রিটেনে একজন ইন্টেলিজেন্স অফিসারের বেতন শুরুর দিকে বছরে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার পাউন্ড।
তবে তাকে নিয়োগের আগে ব্যাপক পরিমাণে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। কেননা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য নিয়ে তাকে কাজ করতে হবে। অথবা এমন অনেক তথ্য থাকবে তার হাতের নাগালে।
আগে ব্রিটেনে গোয়েন্দা হতে হলে প্রার্থী খাঁটি ব্রিটিশ কিনা এমন প্রমাণ করতে হতো। আবেদনকারীর বাবা মায়ের সেখানে জন্ম বাধ্যতামূলক ছিল।
তবে এই ধারায় পরিবর্তন আসছে। অ্যালেক্স ইয়ঙ্গার বলছেন, সংস্থায় কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে জাতীয়তা বিষয়ক ধারা শিথিল করা হচ্ছে।