এই ননসেন্সেও কখনো আইন আবার কখনো ভরেছে জেলে
বায়ুত্যাগের কারণে জেল :
২০১২ সালের কথা। হ্যারল্ড ওয়েইন হ্যাডলি জোনস কাউন্টি জুনিয়র কলেজে পড়াশোনা করছিলেন। আর কয়েক মাসের মধ্যেই তার পড়াশোনা শেষ হওয়ার কথা। একদিন ঠাট্টা করে একটি কাগজে ফার্ট নিয়ে লেখে হ্যাডলি। সেখানে ‘বোমা’ শব্দটি ব্যবহার করে সে। ফলে খুব দ্রুত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো স্কুলে। ১১টি ইমার্জেন্সি রেসপন্স এজেন্সি চলে আসে দ্রুত। পরবর্তীতে পুলিশ এসে হ্যাডলিকে গ্রেপ্তার করে এবং ২০ হাজার ডলার জরিমানা করে।
বায়ুত্যাগ থেকে লড়াই:
খুব ছোট ব্যাপার হলেও এর জন্য কিন্তু কম লড়াই হয়নি। এই যেমন, ২০১৬ সালে ফ্লোরিডার ডেবরাহ অ্যান বার্নস প্রন্ড তার প্রেমিক বাটলারের ওপরে ক্ষেপে যান বায়ুত্যাগের জন্য। পরবর্তীতে একটা সময় তাদের ঝগড়া মারামারি থেকে খুনোখুনি পর্যন্ত গড়ায়। বার্নস ছুরি ছুঁড়ে মারেন প্রেমিকের দিকে। আহত হন বাটলার আর পালিয়ে যান বার্নস। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে ৫০ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হয় এই নারীকে।
গরুর বায়ুত্যাগের আইন :
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জেরি ব্রাউন গ্রীনহাউজ গ্যাস বাড়িয়ে দেয় এমন কোন ব্যাপারের পক্ষে ছিলেন না। একটা সময় এই কারণেই গরুর খামারের প্রতি বিদ্বেষ আসে তার। ২০১৬ সালে ব্রাউন এমনকি সিনেট বিল ১৯৮৩র স্বীকৃতি দেন। মিথেন, কার্বন এবং অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাসের উৎস হিসেবে গরুর গোবর এবং বায়ুত্যাগকে দায়ী করেন তিনি। আইন হয় খামারিরা যেন এই বায়ুদূষণ রোধ করে।
আর তাই সরকার এমন একটি পদ্ধতি চালু করে যেখানে গরু বায়ুত্যাগ করলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব। যদিও সরকারের পক্ষে সমস্ত খামারে ডাইজেস্টার প্রদান করা সম্ভব ছিল না। ফলে এখনো, আইন থাকা স্বত্বেও মনের সুখে বায়ুত্যাগ করে যাচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার গরুরা।
রাস্তা থেকে আদালতে :
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির কথা। বার্লিনে এসময় শোরগোল তুলে দেয়, সামান্য এক বায়ুত্যাগের ঘটনা। একজন মানুষকে পার্টি থেকে সরিয়ে এনে তার আইডি কার্ড দেখতে চায় পুলিশ, মানুষটি কোনো কথা না বলে বায়ুত্যাগ করে পরপর দুইবার। আর এই ব্যাপারটি নিয়ে ক্ষেপে যায় পুলিশ। ৯০০ ইউরো জরিমানা করা হয় তাকে। আসামী সেটি না দিতে চাইলে মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। শেষমেশ আদালতেই মীমাংসা হয় ব্যাপারটির।
বায়ুত্যাগের কারণে প্লেন বন্ধ :
এই বছরের কথা। দুবাই থেকে অ্যামস্টারডামের এক বিমানে এক নাগাড়ে বায়ুত্যাগ করতে থাকেন এক বৃদ্ধ। তাদের অনুরোধ বা নির্দেশ কোনটি দিয়েই কাজ না হলে, পরবর্তীতে বিমান দ্রুত নীচে নামানো হয়। বৃদ্ধকে নামিয়ে চলতে শুরু করে বিমান। তবে এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়।
২০১৭ সালে আমেরিকান এয়ারলাইন্সে বায়ুত্যাগের প্রচন্ড গন্ধ পেলে একটা সময় বিমান নিচে নামানো হয় এবং পররবর্তীতে দেখা যায় যে, সেটি মূলত প্লেনের মেকানিক্যাল কোন সমস্যার কারণে সৃষ্টি হয়েছিল।
২০০৬ সালে বিমানে কিছু জ্বলার গন্ধ পেলে বিমান নিচে নামানো হয়। অবশ্য, শেষ অব্দি জানা যায় যে একজন নারী নিজের বায়ুত্যাগের গন্ধকে ঢাকার জন্য দিয়াশলাই জ্বালিয়েছিলেন।
এ তো গেল সামান্য কিছু উদাহরণ। বায়ুত্যাগের মতো ছোট্ট একটি ব্যাপারের কারণে এমন অনেক বড় বড় সমস্যায় পড়তে হয়েছে মানুষকে। কখনও কেউ চাকরি হারিয়েছে, কখনও কেউ প্রেমিকা। তবে হ্যাঁ, যত সমস্যাই হোক না কেন, এই বিরক্তিকর ব্যাপারটি ছাড়া কি চলা সম্ভব? আপনিই বলুন!