গৃহবধূর কীর্তি, ব্যবহার শেষে নিজেই পচে যাবে এই পেন
কলকাতা টাইমস :
ছোটবেলায় ঝাঁটার কাঠিতে কাগজ পেঁচিয়ে কলম বানাতেন তিনি। দিব্যি ছবি আঁকতেন মাটিতে। সেই ধারণা থেকেই ৪০ বছর বয়সে এসে নাসিমা বানিয়েছেন ‘পরিবেশবান্ধব’ এক পেন । যেটি ব্যবহারের পর ফেলে দিলে আপনা-আপনি পচে যাবে। তিনি যশোরের বাসিন্দা নাসিমা।
এই কলম তৈরির উপকরণ হলো রঙিন কাগজ, আঠা, কলমের রিফিল ও স্টিকার। এসব উপকরণ দিয়ে হাতেই প্রতিদিন ২০০ পেন তৈরি করছেন নাসিমা। পেন্টির নাম রেখেছেন ‘শুভ পরিবেশবান্ধব কলম’। এটির লেখার মান প্রচলিত বলপয়েন্ট কলমের মতোই। প্রথম দিকে এই কলম বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছিলেন নাসিমা। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে তিনি এখন কলম বিক্রি করছেন বিভিন্ন অফিস ও দোকানে।
নাসিমা থাকেন যশোর শহরের লোন অফিস পাড়ায়। পড়ালেখা করেছেন চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত। বিয়ে হয় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্য মীর রবিউল আলম বাচ্চুর সঙ্গে। ২০০০ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন বাচ্চু। শ্রবণপ্রতিবন্ধী স্বামী এখন বেকার। পরিবারে আরো দুই সদস্য আছে; মেয়ে রেবেকা সুলতানা ও ছেলে মীর নাঈম আলম শুভ। মেয়ে ঢাকায় একটি কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করছেন। ছেলে এবার এসএসসি পাস করেছে। এখন ছেলে তাঁর কলম তৈরি ও বিক্রির কাজে সহযোগিতা করে।
নাসিমা বললেন, ‘প্লাস্টিকের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতির বিষয়টি আমি জানি। দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার প্লাস্টিকের কলম ব্যবহার করা হয়। কালি শেষ হলে সেসব কলম মানুষ যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়। ব্যবহার শেষে এমন ফেলে দেওয়া কলমের সংখ্যা লাখ লাখ। প্লাস্টিকের তৈরি এসব কলম পচে না, নষ্টও হয় না; বরং পরিবেশের, মাটির ক্ষতি করে।’