‘৭২ হাজার টন’ হিরে দিয়েই তৈরী এই গোটা শহর!
আর ধোঁয়াশা না বাড়িয়ে এবার খোলাশা করা যাক। জার্মানির বাভারিয়া স্টেটের নর্ডলিনজেন শহরে রয়েছে এই হিরে। কিন্তু এই হীরে যে শুধুমাত্র রত্ন হিসেবে জরুরি তা কিন্তু, নয়, কেননা এই হীরের গুরুত্ব অন্য দিক থেকেও রয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে প্রায় ২৫ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড বেগে এক গ্রহাণু আছড়ে পড়েছিল পৃথিবীর বুকে। সেই গ্রহাণুর সঙ্গে ভূপৃষ্ঠের সংঘর্ষ হয়। এর ফলে যে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছিল জার্মানির এই জায়গায়, তা এই গোটা শহরটারই সমান। এভাবেই শহরটার উৎপত্তি।
এই বিস্ফোরণে সৃষ্ট মারাত্মক চাপ ও তাপের ফলে ‘কোর্স-গ্রেইনড’ পাথর সুয়েভাইট তৈরি হয়েছিল। এতে থাকে কাচ, কার্বন কেলাস ও হীরা। সংঘর্ষের পরে এই হীরেয় ছড়িয়ে পড়েছিল এই শহরে। কিন্তু তা এতটাই সূক্ষ্ম যে, সেগুলি খালি চোখে দেখা যায় না। ষাটের দশকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেন, এই হিরে গ্রহাণু থেকেই এসেছে।
৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে এই শহরের বাসিন্দারা সুয়েভাইট দিয়ে বাড়ি তৈরি করেন। গির্জা থেকে সাধারণ বাড়ি, সবই তৈরি হয় এই হীরের পাথর দিয়ে। এই সময় থেকেই বসতি গড়ে ওঠে এই শহরে। যেহেতু নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে সূক্ষ্ম হীরার কুচি লুকিয়ে রয়েছে, তাই প্রতিটি বাড়িও তো এক অর্থে হীরের বাড়ি। প্রায় ৭২ হাজার টন হীরে রয়েছে এই শহরের বাড়ির নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে।
‘হাই ক্যারাট’ বাড়িগুলি নিয়ে তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিশেষ গর্ব রয়েছে। বাড়ির মধ্যেই যে রয়েছে হীরে । খুব সূক্ষ্ম এই হীরের কণা, প্রায় ০.২২ মিমি ব্যাস। এত ঘন ও সূক্ষ্ম হলেও এই হীরা তো ব্যবহার করা যায় না। তবে পর্যটকদের মধ্যে এই হীরার বাড়ির শহর নিয়ে আগ্রহ তো রয়েছে।স্থানীয় রাইস ক্রেটার মিউজিয়ামে এই ঘটনাটি নিয়ে বেশ কিছু দ্রষ্টব্য ও নিদর্শন রয়েছে। বিশ্বের নানা দেশ থেকে উৎসুকদের ভিড় থাকে এই শহর ও মিউজিয়ামে। সেই ভিড় অবশ্য চোখে পড়ার মতো তা বলতেই হবে।