এতো সন্তান যে সবার নামই মনে থাকে না এই মহিলার
কলকাতা টাইমস :
২০১৬ এ ২৩তম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি । ৪৬ বছরের এই মহিলা ইতিমধ্যে ২২ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে এরমধ্যে তার ৫টি সন্তান মারা গিয়েছেন। এখন তার কাছে বড় হচ্ছে অনাগত সন্তানকে সুন্দর ও সুস্থভাবে পৃথিবীর আলোতে নিয়ে আসা। ভাবছেন এ গল্প! না। এটাই বাস্তব।
বাস্তবে এই ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের কানুচক গ্রামে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তবে হইচই ফেলে দেওয়া ঘটনায় বিশেষ কোনো হেলদোল নেই ২৩তম সন্তানের বাবা শেখ সাত্তারের। আর পাঁচটা বিষয়ের মতো এই ব্যাপারটিও তার কাছে খুব স্বাভাবিক। এতে কোনো অন্যায় দেখছেন না তিনি। তার ভাবখানা এমন ‘জিভ দিয়েছেন যিনি, আহার দেবেন তিনি’।
তবে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে শেখ সাত্তার বা বসিরান বিবির অজ্ঞতা স্পষ্ট। বরং স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে গিয়ে ৫২ বছর বয়সে তিনি যে ফের বাবা হতে চলেছেন সেই আনন্দে এখন তবে সবচেয়ে মজার বিষয়, এক নিঃশ্বাসে তো দূরের কথা, মাথা চুলকেও জীবিত সব সন্তানের নাম এই দম্পতি বলতে পারলেন না। অনেক কষ্টে মাত্র প্রথম তিন মেয়ের নাম বলতে পেরেছেন। তারা হল রুকসানা, সাহানারা ও জাহানারা। বাকি নয় জনের নাম সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শেখ রহমতকে জিজ্ঞাসা করে কোনও রকমে বলতে পেরেছেন। এরা শেখ জামশেদ, শেখ সবরাতি, শেখ লালু, শেখ কালু, শেখ রহমত, বাণী খাতুন, শেখ মহম্মদ, সুরাদ আলি, শেখ বসির। বাকিদের নাম রহমতও মনে করতে পারেননি।
ইতিমধ্যে চার মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ২২ সন্তানের জন্মদাতা। সাত্তার এক সময়ে ফেরি করতেন। কিন্তু বর্তমানে পায়ের সমস্যার জন্য ফেরি করতে পারেন না। দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করে। বর্তমানে ১৭ জনকে নিয়ে একসঙ্গে থাকেন সাত্তার। ছিটেবেড়ার দেওয়াল। খড়ের চালের বাড়ি। গরমকালে কষ্ট নেই। রাতে বাড়ির বাইরে শোয়া যায়। কষ্ট বর্ষা ও শীতে।
ওই ছোট একচালার বাড়িতে ১৩টি প্রাণীকে একসঙ্গে থাকতে হয়। তিনি জানেন না আশু সন্তানটিকে কীভাবে ও কোথায় রাখবেন। তার বিশ্বাস, আগের ২২টির মতো এই সন্তানকেও ঠিক সামলে নেবেন।
তবে সম্প্রতি তিনি সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পান্ডার কাছে অনুরোধ করেছেন গীতাঞ্জলি প্রকল্পে তাকে একটি বাড়ি বানিয়ে দিতে। প্রকল্পের ৭০ হাজার টাকায় লম্বা গোয়ালের মতো একটি বাড়ি তৈরি করবেন ছিটেবেড়া দিয়ে।
এই ব্যাপারে অমলবাবু জানিয়েছেন, ‘চেষ্টা করছি গীতাঞ্জলি প্রকল্পে সাত্তারকে একটি বাড়ি তৈরি করে দিতে’। তবে অমলবাবু জানিয়েছেন, সাত্তারবাবুকে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক রকম পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ‘কিন্তু কানে তুললেন নি’!