January 31, 2025     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

জল না খেয়েও এক বছর বাঁচতে পারে যারা

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

লের ঘাটতি মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতির কারণ। তৃষ্ণা মেটানোর জন্য যথেষ্ট জল না পেলে আমাদের মাথাব্যথা, দ্রুত হৃ‍ৎস্পন্দন, পেশি দুর্বলতা এবং পরিণামে চেতনা হ্রাস পেতে থাকে। অনেক প্রাণীকেই জলের খরা মোকাবেলা করতে হয়। কিন্তু কিছু প্রাণী শুষ্ক মৌসুমে সেক্ষেত্রে চমৎকার প্রতিভাশালী হয়। তারা শরীর থেকেই নানা প্রক্রিয়ায় জলের তৈরি, সংরক্ষণ ও ব্যবহার করে।

যখন বৃষ্টি হয় কচ্ছপ, মরু কচ্ছপ এবং গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের দৈত্য কচ্ছপ তাদের থলি জল দিয়ে ভরাট করে রাখে। শুষ্ক মৌসুমে মূত্রাশয় দিয়ে জল নিষ্কাশন করতে পারে তারা।

ফিনিক্স অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গ্লেন ওয়ালসবার্গ বলেন, কাছিমের মাটিতেও খানা আছে। এরা সবুজ শাক-সবজি থেকে প্রয়োজনীয় জল শুঁষে নিতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ান জল-অধিষ্ঠিত ব্যাঙ তার ফুসফুস, টিস্যু, থলি ও মুখে জল সঞ্চয় করে। এই স্ফীত উভচর তার ওজনের দ্বিগুণ ও পর্যাপ্ত জল সংরক্ষণ করতে পারে।

সাপ, পাখি, কুমির এবং বন্য কুকুরসহ মরুভূমির অন্যান্য অধিবাসীরাও বাইরের জল স্টোরেজের ট্যাংক তাদের শরীরেই তৈরি ও ব্যবহার করতে পারে।

অন্যান্য খরাপীড়িত প্রাণীরা তাদের স্বজাতির মৃতদেহের সংরক্ষিত জল নিংড়ে নিয়ে ব্যবহার করতে পারে।

উত্তর আমেরিকার মরুভূমির প্রসারিত পায়ের ব্যাঙেরা তাদের নখের মতো পা ব্যবহার করে মাটি খনন করে ভূগর্ভে বছরের তিন-চতুর্থাংশ সময় নিরাপদে থাকতে পারে। ব্যাঙেরা নিজেদের একটি শ্লেষ্মা ঝিল্লির মধ্যে সঙ্কুচিত-মোড়ানো পানি সংরক্ষণ করতে পারে। ১০ মাস পরে যখন ভারি বৃষ্টির সঙ্কেত পায়, তখন তারা মাটির ওপরে উঠে আসে- জানান ওয়ালসবার্গ।

দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার কিছু গাছ ব্যাঙ তাদের চামড়ার সামনে ক্ষরণের মাধ্যমে জলের ক্ষতি কমায়।

আফ্রিকান লাঙফিসও শুষ্ক মৌসুমে গর্তে বাস ও তাদের শ্রোণী পাখনার ব্যবহার করে শুকনো কাদার মধ্যেকার জল নিয়ে নেয়। এজন্য লাঙফিসের একটি থলি একটি ফুসফুসে বিকশিত হয়েছে এবং তার একটি অত্যন্ত উন্নত কান স্থলজ প্রাণীর কানের অনুরূপ হয়েছে।

মরুভূমির প্রাণীদের জন্য খাদ্যও প্রায়ই জল শ্রেষ্ঠ উৎস হয়। যখন জল না থাকে, তখনকার জন্য যতোটুকু পারে সংরক্ষণ করে রাখে। যেমন- উত্তর আমেরিকার ক্যাঙ্গারু ইঁদুর ও পকেট ইঁদুর যখন আর্দ্র আবহাওয়ায় গাছপালার বীজ সংগ্রহ করে বছরের বাকি সময় খেয়ে বেঁচে থাকে।এই তীক্ষ্মদন্তি প্রাণী উচ্চ কার্বোহাইড্রেট বীজের বিপাকীয় জল খেয়ে পান করার প্রয়োজনীয়তা বাইপাস করে। ক্যাঙ্গারু ইঁদুর একটি অসাধারণ কৌশলে তাদের প্রস্রাব থেকেও জল উদ্ধার করে। 

‘ক্যাঙ্গারু ইঁদুর ও পকেট ইঁদুর মুদি দোকানদারদের মতো হয়। তারা তা মজুদ করে এবং খেয়ে বেঁচে থাকে’- বলেছেন ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরি দাম।

চর্বিও মরুভূমিতে জলের একটি ভালো উৎস হয়। মরুভূমির যাযাবর মেদবহুল পশুরা বিচ্ছুরিত চর্বিতে শীতলও থাকে। উট ও আফ্রিকার একজাতীয় কৃষ্ণসার মৃগের মতো বড় স্তন্যপায়ী পানির জন্য চর্বি বিপাকের ওপর নির্ভর করে। উট তার কুঁজের মধ্যে ৩৬ কেজি পর্যন্ত পানি সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।

পোকা-মাকড় ও ফণিমণসা অনুর্বর সময়ে পানির যোগান পায় শরীর থেকেই।

প্রতি বছর উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে উষ্ণ সোনারন মরুভূমির মাঠে কাজ করেন গ্লেন ওয়ালসবার্গ। তিনি জানান, কমপক্ষে ৬০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির উভচর এবং প্রায় ১০০ প্রজাতির সরীসৃপ শুষ্ক মৌসুমে নানাভাবে পানির অভাব পূরণ করে।  মরুভূমির মিতব্যয়ী এসব প্রাণী ঘাম, ঊর্ধ্বশ্বাস, শ্বাস, প্রস্রাব এবং মলত্যাগের সময়ও পানি পাওয়ার প্রতিভাশালী উপায় উদ্ভাবন করেছে।

Related Posts

Leave a Reply