জেন গল্পের তিন ফোঁটা
[kodex_post_like_buttons]
সৌগত রায় বর্মন
১. এপার-ওপার
খরোস্রতা নদীর তীরে এক জেন সাধু ধ্যান করছিলেন। ওপার থেকে একজন ছুটতে ছুটতে দৌড়ে এসে নদীর সামনে এসে দাঁড়াল। এত স্রোত যে কিছুতেই ওপারে যেতে পারবে না। ভাবতে ভাবতে চোখে পড়ল এপারের সাধুর ওপর । কোনো উপায় না পেয়ে সাধুকে চিৎকার করে জিজ্ঞেস করল, মাস্টার আমি ওপারে যাবো কি করে?
নির্লিপ্ত সাধু চারদিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি তো ওপারেই আছো।
(এই গল্পটি লেখা হয়েছিল প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। আলবার্ট আইনস্টাইন জেনারেল থিওরি অফ রেলেটিভিটি আবিস্কার করেন ১৯১৬ সালে)
২. সাধু ও চোর
পাহাড়ের নির্জনে বাস করেন এক জেন সাধু। তার পর্ণকুটিরে প্রায় কিছুই নেই। কিছু না থাকাটাই তার সাধনা। একদিন চাঁদনি রাতে সাধু দূর থেকে দেখল, একটা চোর তার ঘরে ঢুকেছে। সাধুর খুব কষ্ট হল। চোর তো কিছুই পাবে না। তার পরিশ্রমটাই বিফলে যাবে। সে চুপি চুপি ঘরে ফিরে এল। চোর তখন পালাতে ব্যস্ত। সাধু চোরের হাত ধরে বলল, কিছুই তো পেলে না। কিন্তু খালি হাতে ফিরে যাবে? তা হবে না। কিছু তোমাকে নিতেই হবে। চোর কী আর করে? চারদিক তাকিয়ে বলল, তোমার চিবরটা তা হলে আমাকে দাও। সাধু তার গা থেকে চিবর খুলে তাকে দিয়ে দিল। চোর কোনো রকমে পালিয়ে বাঁচল।
চোর চলে যাবার পর সাধু মনে মনে খুব হাসল। ভাবল, চোরটা কী বোকা! আকাশের চাঁদটাও তো আমার। ওটা চাইলেও তো পারত। দিয়ে দিতাম।
৩. কত সুখ
এক জেন সাধু তার শিয্যর সঙ্গে শহরে এসেছে। এসেই শিয্যকে বলল আমাকে বাজারে নিয়ে চল। শিয্য বিস্মিত হলেও প্রভূর কথা মতো তাকে বাজারে নিয়ে এল। সাধু এ দোকান সে দোকান ঘুরে বেড়ায়। দামি দামি জিনিস দেখে, দাম জিজ্ঞেস করে। শিয্য এই সব দেখে খুব বিরক্ত হল। প্রভূর হল কী। শেযে কি তাকেও লোভ গ্রাস করল। সাধু নির্বিকার। জিনিস দেখেই যাচ্ছে। একটা সময় আর থাকতে না পেরে প্রভূকে প্রশ্ন করল, শেযে আপনিও লোভে পড়লেন? ছিঃ। গুরু বলে ভাবতে আমার লজ্জা করছে!
সাধু স্মিত হেসে বলল, না দেখছিলাম পৃথিবীতে কত কিছু ছাড়াই আমি কত সুখে আছি।