এক-দুই নয় আজও এই বাড়িতে বাস করে তিন রাজার প্রেতাত্মা!
কলকাতা টাইমস :
তবে যে বলে, ভূত ঈশ্বরকে ভয় পায়? যেখানে ঈশ্বর বিরাজ করেন, সেখানে না কি তাদের চিহ্নমাত্রও দেখা যায় না? হবে হয়তো! কী জানি! কিন্তু, খটকা যেতে চায় না। সে বড় বেয়াড়া! খালি প্রশ্ন তুলেই যায়!
দ্য কনজিউরিং ২’, সিনেমাটিকে দেখা যায় এক অদ্ভুত গায়ে কাঁটা দেওয়া দৃশ্য। একটি ঘর, তার দেওয়ালে পরম করুণাময় ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্টর ক্রস ঝুলছে। তাও একটা কি দুটো নয়, অনেকগুলো! এবার রাতের অন্ধকারে সেই ঘরে এসে ঢোকে এক অভিশপ্ত প্রেতাত্মা। সে যখন দেওয়ালের পাশ দিয়ে হেঁটে যায়, তখন একটা একটা করে উল্টে যেতে থাকে পবিত্র ক্রসগুলো। এতটাই তার মন্দ শক্তির বহর!
মূল কথা, ছবির এই ভূত ঈশ্বরের পুত্রর প্রতীকী চিহ্নকে ভয় তো পেলই না, বরং তারই অশুভ উপস্থিতি প্রভাবিত করল পবিত্র প্রতীককে। চিত্র সমালোচকরা ব্যাপারটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন প্রেততত্ত্ববিদরা। কিন্তু, সদুত্তর মেলেনি। অনেকেই তাই ব্যাপারটাকে উড়িয়ে দিতে চান গাঁজাখুরি বলে!
কিন্তু, মুশকিল হল, এই পৃথিবী অগুনতি আজব রহস্যে ভরা। সব কিছুর ব্যাখ্যা সব সময়ে মেলে না ঠিকই, তা বলে ঘটনাগুলোকে উড়িয়েও দেওয়া যায় না। সেই রকমই এক বিচিত্র তো বটেই, তার চেয়েও বেশি করে রহস্যময় ঘটনা এই ঈশ্বর আর প্রেতাত্মার যুগল উপস্থিতি। যেখানে প্রেতাত্মা ঈশ্বরকে ভয় পায় না!
খুব একটা দূরে নয়, গোয়াতে গেলেই টের পাওয়া যায় ব্যাপারটা ঠিক কী রকম হতে পারে! দক্ষিণ গোয়ার ক্যানসলিম এক ছোট্ট গ্রাম। সেই গ্রামেই রয়েছে এক গির্জা। যেখানে ঈশ্বর আর ভূত- দুইয়েরই সহাবস্থান দেখা যায়! গির্জার নাম থ্রি কিংস চার্চ।
তিন রাজা আর এই গির্জার সম্পর্কটা ঠিক কী, তাই নিয়ে এক বহু পুরানো কাহিনী শোনায় গোয়া। বলা হয়, এক সময়ে গোয়ায় ছিল তিন পর্তুগিজ রাজার ছোট ছোট তিন রাজত্ব। তিন রাজত্বের মধ্যে ঝামেলা আর তার জেরে যুদ্ধ লেগেই থাকত। এক দিন এক রাজা, নাম তার হোলগার, এই গির্জায় আসার আমন্ত্রণপত্র পাঠালেন বাকি দুই রাজার কাছে। সেই আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, রাজত্বের মঙ্গলের জন্য পারস্পরিক বিবাদ-বিসম্বাদ মিটিয়ে সন্ধি করে ফেলার কথা! আর ছিল, পান-ভোজনের বন্দোবস্ত।
নির্ধারিত দিনে বাকি দুই রাজা এসে পৌঁছলেন গির্জায়। শুরু হল পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা এবং পানাহার। তবে, সেই আলাপ-আলোচনা বেশিক্ষণ কিন্তু চলল না! হোলগার বিষ মিশিয়ে দিয়েছিলেন বাকি দুই রাজার পানীয়তে!
তার পরেও কিন্তু তার নির্বিবাদে রাজত্ব করা হল না! ওই গির্জাতেই তিনি যখন নিরঙ্কুশ রাজ্য উপভোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন আর উপভোগ করছেন সাফল্য, খবর পেলেন, বাকি দুই রাজার প্রজা আর সেনারা ঘিরে ফেলেছে গির্জা। তারা হোলগারের সেনাদেরও মেরে ফেলেছে। এবার, হোলগারকে বধ করে বদলা নিতে চায়।
জানার পর হোলগার আর সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। বিষ খেয়ে তিনিও আত্মহত্যা করেন! কিন্তু, নিয়তির পরিহাসে তিন রাজার প্রেতাত্মা থেকে গেল ওই গির্জাতেই। এখনও তারা যে আছেন, সেটা গির্জায় পা দিলে স্পষ্ট অনুভব করা যায়।
শোনা যায়, গির্জায় ঢুকলেই মনে হয়, কেউ যেন পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কেউ যেন কথা বলছেন কানের কাছে। মাঝে মাঝে শোনা যায় দীর্ঘশ্বাসও! তবে হ্যাঁ, তারা আজ পর্যন্ত কারও কোনও অনিষ্ট করেননি! বিশ্বাস না হলে একবার ঘুরে এসেই দেখুন! বেশি দুরে নয়, ভারতের গোয়ায়।