যখন তখন মাথাব্যথা হয় নাকি? তাহলে …
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আজকালকার ব্যস্ত জীবনযাত্রায় মানসিক চাপ আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, ঘুমের অভাব, শরীরের দিকে খেয়াল না রাখা এবং সঠিক ডায়েটের অভাবে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। মাঝেমধ্যেই মাথাব্যথার সমস্যা হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আবার মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন। অনেক সময় তীব্র মাথা ব্যাথার সাথে সাথে, বমি ভাব, চোখে যন্ত্রণা এমনকী মুখ ও চোয়ালেও ব্যথা হতে থাকে। তবে জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তনই আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
১) চা-কফি পান এড়িয়ে চলুন :
মাথাধরা ছাড়াতে আমরা অনেকেই চা-কফির উপর নির্ভর করি। অনেকেরই ধারণা, চা বা কফি মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আসলে, চা-কফিতে থাকা ক্যাফিন স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করে, ফলে ব্যথা কমে গেছে বলে ভ্রান্তি হতে পারে। বরং বেশি মাত্রায় চা-কফির সেবন, শরীরের অন্য জটিলতা বৃদ্ধি করতে পারে।
২) নিরুদ্বেগ বিশ্রাম :
মাইগ্রেন অথবা প্রচন্ড মাথা যন্ত্রণা হলে কখনও কাজের মধ্যে থাকবেন না। ঘর অন্ধকার করে চোখ বুজে কিছুক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকুন। এই সময় মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করা গেম খেলা অথবা টিভি দেখা এড়িয়ে চলুন। কিছুক্ষণের নিরুদ্বেগ বিশ্রাম, যন্ত্রণা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে।
৩) উগ্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন :
তীব্র গন্ধযুক্ত পারফিউম, ধূপ-ধুনো অথবা রুম ফ্রেশনারের উগ্র গন্ধ থেকেও কিন্তু মাথা যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। তাই উগ্র গন্ধ যুক্ত যেকোনও পণ্য থেকে দূরে থাকুন। ক্রিম, সাবান, শ্যাম্পুর গন্ধও এড়িয়ে চলা ভাল।
৪) এক্সারসাইজ করুন :
এক্সারসাইজ মাইগ্রেনের ব্যথা ও সাধারণ মাথাব্যথা কমাতে পারে। তাই আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ঘাড়ের ব্যায়াম, অ্যারোবিক, ফ্লেক্সিবিলিটি এক্সারসাইজ, অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করবেন।
৫) কিছু নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলুন :
অ্যালকোহল, চকোলেট, চিজ এবং অন্যান্য অনেক খাবার অনেক সময় মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে আপনি যদি জানেন, কোন কোন খাবারে ফলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই সেই সকল খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
৬) ধূমপান করবেন না : ধূমপান কেবল ফুসফুসকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, এটি মাথাব্যথা বাড়াতে পারে এবং অন্যান্য উপসর্গও বাড়াতে পারে।
৭) ঘুমের নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে চলুন : ঘুম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং হতাশা ও উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। তবে ঘুমের নির্দিষ্ট কোনও সময় না থাকলে, মাথা যন্ত্রণা এবং মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় সূচি মেনে, ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
৮) মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন : মানসিক চাপ বা স্ট্রেস, মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। তাই মানসিক চাপ যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন, দেখবেন অনেকটা স্বস্তি মিলবে।
৯) সুষম ডায়েট মেনটেন করুন :
তাজা ফল, শাকসব্জী, গোটা শস্য, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, মাইগ্রেন এবং সাধারণ মাথাব্যথা প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল উপায়। এছাড়াও, খালিপেটে থাকবেন না। সময়মতো খাওয়ার অভ্যাস করুন। খিদে পেটে থাকলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে।
১০) শারীরিক ভঙ্গি ঠিক রাখুন : সারা দিন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে বসে থাকা, আপনার মাথা, ঘাড় এবং কাঁধের পেশীগুলির ওপর ধকল পড়তে পারে, যার ফলে মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা হয়। তাই নিজের দিকে খেয়াল রাখুন এবং আপনার শারীরিক ভঙ্গিমা ঠিক রাখুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন, কাঁধ ঠিক রাখুন, এরকম কিছু কিছু দিকে নজর দিলে মাইগ্রেন ও মাথাব্যথার সমস্যা কিছুটা হলেও কমতে পারে।