নো সাইড এফেক্ট : হিট স্ট্রোকের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি!
কলকাতা টাইমস :
যেভাবে পারদের কাঁটা পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে বাড়ছে তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পরাটা অস্বাভাবিক নয়। একথা কে না জানে যে গরম একা আসে না, সঙ্গে নিয়ে এমন কিছু সমস্যাকে যা বাস্তবিকই ভয়ের বিষয়। যেমন ধরুন অতিরিক্ত গরমের কারণ যে কোনও সময় হিট স্ট্রোক হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ক্লান্তি এবং পেশিতে ক্র্যাম্প লাগার মতো আসুবিধা তো রয়েছেই। তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি।
যদিও আর কয়েকদিন পরেই বর্ষা আসতে চলেছে, কিন্তু আবহাওয়ার গতি প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে বর্ষার আগে একবার শেষবারের জন্য গরম হয়তো একটা দাপানো ইনিংস খেলবে। তাই তো এই প্রবন্ধ আলোচিত হোমিওপ্যাথি মেডিসিনগুলি বাড়িতে মজুত রারুন। এগুলি হিট স্ট্রোক সহ একাধিক গরমকালীন সমস্যা কমাতে মন্ত্রের মতো কাজ করে। এখন প্রশ্ন হল, কী কী ওষুধ গরমকে হার মানাতে আপনার সঙ্গ দিতে পারে? চলুন নজর ফেরানো যাক সেদিকে। সাধারণত গরমকালে যে যে সমস্যাগুলি বেশি মাত্রায় মাথা চারা দিয়ে হয়ে ওঠে সেগুলি হল…
১. হিট ক্র্যাম্প: প্রচন্ড গরমের কারণে হাঠাৎ হঠাৎ পায়ের আথবা হাতের, কোনও কোনও সময় কাঁধেও মারাত্মত ক্র্যাম্প লাগে। আসলে শরীর থেকে বেশি মাত্রায় জল বেরিয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তাই তো খোলা জায়গায় যারা কাজ করেন তাদের এই সময় বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এক্ষেত্রে যে যে ওষুধগুলি দারুন কাজে আসে সেগুলি হল বেলেডোনা, নেট্রাম মুর, ক্য়াপ্রাম মেট, চায়না প্রভৃতি ওষুধ।
প্রসঙ্গত, মানুষ এবং পরিস্থিতি বিশেষে হোমিওপ্যাথি মেডিসিনের ডোজ এবং মাত্রা পরিবর্তিত হয়ে যায়। তাই এই ওষুধগুলি কত মাত্রায় খেলে আপনার উপকারে লাগতে পারে তা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে ভুলবেন না। প্রসঙ্গত, হিট ক্র্যাম্পের লক্ষণগুলি হল- যন্ত্রণা, কোনও কারণ ছাড়া হঠাৎই অস্বস্তি, যন্ত্রণাটা থেমে থেমে হওয়া, আপনে থেকে কষ্ট কমে যাওয়া প্রভৃতি।
২. গরমের কারণে মারাত্মক ক্লান্তি: প্রচন্ড ঘামের কারণে শরীরে যখন জল এবং নুনের ঘাটতি দেখা দেয় তখন মাথা ঘোরা, অসম্ভব ক্লান্তি, পেশিতে টান লাগা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া প্রভৃতি সমস্যাগুলি দেখা দেয়। অনেক সময় হঠাৎ করে ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে বেশি করে নুন-চিনির জল খাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ মতন নেট্রাম কার্ব, সেলেনিয়াম, জেলেসেমিয়াম এবং ল্যাকেসিস-এর মধ্য়ে কোনো একটা হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেতে পারেন।
৩. হিট স্ট্রোক: গরমের সময় সবথেকে বেশি ভয় থাকে হিট স্ট্রেক হওয়ার। অনেক সময় খোলা জয়গায় থাকলে শরীরের অন্দরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে জল এবং নুনের পরিমাণ কমে গিয়ে দেখা দেয় এমন সমস্যা। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে হার্ট রেট বেড়ে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা, বমি ভাব, ত্বক গরম হয়ে যাওয়া, চোখের সামনে বারে বারে অন্ধকার হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি প্রভৃতি লক্ষণগুলির বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। এক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে ঠান্ডা জয়গায় বসিয়ে জল খাওযাতে হবে। প্রয়োজনে সারা গায়ে জল ঢাললেও আরাম মিলতে পারে। সেই সঙ্গে চিকিৎসেকর পরামর্শ নিয়ে গ্লোনিয়াম, নেট্রাম কার্ব, বেলেডোনা অথবা ল্যাকেসিস-এর মতো হোমিওপ্যাথি ওষুধগুলি দেওয়া যেতে পারে।
৪. গরমের কারণে যে শরীর ভাঙতে শুরু করেছে তা বুঝবেন কীভাবে?
এক্ষেত্রে যে যে লক্ষণগুলি দেখা দেবে সেগুলি হল- মারাত্মক ঘাম হবে, ক্লান্তি, পেশিতে বারে বারে ক্র্যাম্প লাগা, মাথা ঘোরা, বমি হওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, ব্লাড প্রেসার ওঠা-নামা করা ইত্যাদি।