গরম ভাতের সঙ্গে কুমড়ো সবজি খেয়েই দেখুন!
কলকাতা টাইমস :
গবেষণা বলছে মাত্র ১০০ গ্রাম কুমড়ো খেলেই শরীরের ভেতরে ভিটামিনের চাহিদা তো মিটে যায়ই, সেই সঙ্গে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, এমনকি পটাশিয়ামের মতো খনিজের ঘাটতিও মেটে, যা হার্টকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি ক্যান্সারকেও দূরে রাখে। আর যদি সেই ভাজা কুমড়ো , গরম গরম ভাত আর ঘিয়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়, তাহলে তো কথাই নেই!
ডায়াবেটিস : রোজের ডায়েটে কুমড়াকে জায়গা করে দিলে নানা কারণে দেহের অন্দরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে, তারা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে কুমড়োর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!
ত্বকের সৌন্দর্য : কুমড়ো য় থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীর প্রবেশ করা মাত্র ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে সময় লাগে না। অন্যদিকে কুমড়ার ভেতরে থাকা ভিটামিন এ এবং সি বলিরেখা কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের বয়স কমে চোখে পরার মতো।
মানসিক অবসাদ : কুমড়ো এবং তার বীজে উপস্থিত ট্রাইপটোফিন যে মুহূর্তে শরীরে প্রবেশ করে, অমনি দেহে সেরাটোনিন নামর একটি “ফিল গুড” হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মন চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন মানসিক অবসাদের প্রকোপ যেমন কমে, তেমনি স্ট্রেস লেভেলও তলানিতে এসে ঠেকে। ফলে জীবন অনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না।
ওজন নিয়ন্ত্রণ : কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার, যা শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমায়, তেমনি অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে ক্ষিদে কমে যাওয়ার কারণে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ কমে আসে। আর যেমনটা সবারই জানা আছে যে ক্যালরির প্রবেশ কমতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কমে যায়।
দৃষ্টিশক্তি : শরীরে যত ভিটামিন এ-এর মাত্রা বাড়তে থাকে, তত দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে থাকে। বিশেষত ছানি এবং গ্লকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতে এই ভিটামিনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে কুমড়োয় প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ, তাই তো রোজের ডায়েটে এই সবজিটিকে রাখা শুরু করলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
রোগ প্রতিরোধ : নিয়মিত কুমড়ো খেলে শরীরে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই দুটি উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধী সিস্টেমকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। শুধু তাই নয়, কোনও ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
ব্লাড প্রেসার : পরিবারে ব্লাড প্রেসারের মতো রোগের ইতিহাস আছে নাকি? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, কুমড়া বীজের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে দেহে ফাইটোইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যান্সার : কুমড়োয় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
হার্টের ক্ষমতা : হাওয়ার্ড ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে শরীরে ডায়াটারি ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে কোনও ধরনের করনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। এই উপাদানটির মাত্রা যাতে শরীরে কোনও কম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই কারণেই তো নিয়মিত কুমড়া খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এই সবজিতে যে পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, তা হার্টের খেয়াল রাখার জন্য যথেষ্ট।