দেউলিয়া হওয়ার পথে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা তুরস্ক!
কলকাতা টাইমসঃ
তুরস্কের মুদ্রা লিরার দাম ক্রমশ কমেই চলেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। শনিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগান জনগনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, তাদের কাছে যত ডলার এবং ইউরো আছে সেগুলো ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে দিতে। আর নিজেদের মুদ্রার মান পুনরুদ্ধারের এই লড়াইকে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতো দ্রুত লিরার মান কমছে, যার ফলে ধীরে ধীরে দেউলিয়ার দিকে এগিয়ে চলেছে অর্থনৈতিক তালিকায় ১৮ নম্বরে থাকা দেশটি। তুর্কি মুদ্রার দাম কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের বাজারে এমনকি ইউরোপেও। লিরার মান শুক্রবারও ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যদিও দিনের শেষে তা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়ে ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহের শুরু থেকেই এই ধারা অব্যাহত আছে।
বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ৪০ শতাংশ দাম কমেছে টার্কিশ মুদ্রার। গত বছরের জুনে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট এরদোগান ক্ষমতা আরো সুসংহত করার পর থেকে মুদ্রার অবনমন ঘটেছে ৩০ শতাংশ। তবে এই দুঃসময়ে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ দিতে ভোলেনি আমেরিকা। গত শুক্রবারই ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ক থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্কবৃদ্ধির ঘোষণা করেছে। সার্বিকভাবে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের এই বাণিজ্যে দুই পণ্যে শুল্কবৃদ্ধি তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এর ফলে বিশ্ববাণিজ্যে তুর্কি লিরার ওপর আস্থা আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের শক্তিশালী ডলারের বিপরীতে টার্কিশ লিরার দাম দ্রুত কমছে। তুরস্কের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।’ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন ট্রাম্প এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেই। নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা এক উপ-সম্পাদকীয়তে তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকা কখনই তুরস্কের জনগণের উদ্বেগ অনুধাবন করতে পারেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের সার্বভৌমত্বকে সম্মান দিতে হবে এবং তুর্কিদের বিপদ বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে, আমাদের সম্পর্ক আরও জটিল হবে।’
তুরস্কে আটক মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রুনসনের মুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে। সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের মার্কিন সমর্থন, রুশ মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে তুরস্কের আগ্রহ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে উসকানিদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ফেতুল্লাহ গুলেনকে ফেরত আনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট চলছে।