চাদরে রক্তের দাগ দেখতে না পাড়ায় দুই বোনকেই চরম সাজা
বিয়ের পর সম্প্রদায়ে প্রচলিত প্রাচীন প্রথা মেনে কুমারিত্ব পরীক্ষা দিতে হয়েছিল নববধূকে। সেই পরীক্ষায় পাস করতে না পারার জেরে তরুণী ও তার বোনের বিবাহ বিচ্ছেদের রায় দেয় স্থানীয় ‘জাত পঞ্চায়েত’।
বেকায়দায় পড়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই দুই তরুণীর মা। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়ে ওই দু’জনের স্বামী, শাশুড়ি ও পঞ্চায়েতের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গেছে, সেখানকার কঞ্জরভাট সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েক শতক ধরে চলে আসছে নববধূদের কুমারিত্ব পরীক্ষার রীতি।
পুলিশ বলছে, ২০২০ সালের নভেম্বরে ওই সম্প্রদায়ের দুই যুবকের সঙ্গে দুই তরুণীর বিয়ে হয়েছিল। দুই যুবকের মধ্যে এক জন সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। আরেক জন অন্য পেশায় আছে।
বিয়ের পর পরই প্রথা মেনে কুমারিত্ব পরীক্ষা করানো হয় দুই বোনের। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, দুই বোনের মধ্যে এক জন ওই পরীক্ষায় ‘পাস’ করতে পারেনি।
স্বামীর সঙ্গে প্রথমবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর ফলে সাদা চাদরে রক্তের দাগ দেখাতে হতো। তা করতে পারেনি ওই তরুণী। ফলে, তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। বিয়ের আগে মেয়েটির আগে অন্য কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক থাকারও অভিযোগ ওঠে।
ওই তরুণীর বোনকেও সে কারণে বিপাকে পড়তে হয়। তাদের দু’জনকেই নিয়মিত মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। ১০ লাখ টাকা চেয়ে তরুণীর বাপের বাড়িতে চাপ দেওয়া শুরু হয়।
পরে বিষয়টির নিষ্পত্তি চেয়ে স্থানীয় ‘জাত পঞ্চায়েত’-এর দ্বারস্থ হন তরুণীর মা। তার দাবি ছিল, তার মেয়েরা নির্দোষ।
তিনি জানিয়েছেন, মীমাংসা করার জন্য প্রথমেই তার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেন পঞ্চায়েত সদস্যরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় এক মন্দিরে বসে সালিশি বৈঠক। তাতে যুবকের বাড়ির লোকের সমর্থনেই কথা বলে পঞ্চায়েত। সেই সঙ্গেই দুই বোনের বিবাহ বিচ্ছেদের রায়ও দেয়।
পঞ্চায়েতের এ ধরনের রায়ে বিপাকে পড়ে ‘মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি’র দ্বারস্থ হন তরুণীর মা। তারাই পুলিশে যোগাযোগ করে পুরো ঘটনা জানায়।