বউয়ের দাবিতে ‘ইউনিয়ন’
কলকাতা টাইমস :
জল, বিদ্যুৎ বা পাকা সড়কের আবদার নয়, আবদার একটাই- বউ চাই। এমন আবদার হরিয়ানার জিন্দ জেলার অবিবাহিত পুরুষদের।
এমন আবদারে মহামুশকিলে ফেলে দিয়েছে হরিয়ানার রাজনৈতিক নেতাদের। শাসকবিরোধী নেতারা সেই আবদারে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। এখানকার অবিবাহিত পুরুষদের জন্য বিবাহযোগ্য কনে খুঁজে দিতে হবে। তা না হলে আগামী নির্বাচনে কোনো দলেরই ভোট পাওয়ার আশা নেই। এ দাবিতে একজোট হয়ে সেখানকার অবিবাহিত পুরুষরা ইউনিয়নও তৈরি করে ফেলেছেন।
এক অদ্ভুত দাবি। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি মজার মনে হলেও এর পিছনের রয়েছে জটিল সামাজিক বৈষম্য। উত্তর ভারতে কন্যাভ্রুণ হত্যার মাসুল কিভাবে গুনতে হতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ এ জেলা।
ভারতের অনেক রাজ্যের মত এখানেও পুরুষ ও মহিলার অনুপাত ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেছে। জিন্দ জেলায় ১০০০ জন পুরুষের বিপরীতে ৮২৭ জন মহিলা রয়েছেন, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই কম। এর ফলস্বরূপ বহু পুরুষই বিয়ের জন্য মেয়ে পাচ্ছেন না।
অনেকে অন্য জেলা থেকে বিয়ের ব্যবস্থা করে এলেও তাদের পরিবার সেটা মেনে নিতে পারছেন না। যেনো মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বিয়ে সংস্থাগুলো পাত্রীর সন্ধান দেয়ার জন্য বিপুল অর্থের দাবি জানাচ্ছেন। এর ফলে গরিব পরিবার তো বটেই বিত্তশালী পরিবারগুলো অবিবাহিত পুরুষদের বিয়ে করাতে পারছেন না।
তাই বাধ্য হয়ে ২০০৯ সালে ইউনিয়্ন তৈরি করছেন এখানকার সাধারণ মানুষ। তবে ঠিক কতজন পুরুষ অবিবাহিত তার সঠিক সংখ্যা না জানলেও এটা সঠিক যে, বিয়ে করার পাত্রী নেই এই জেলায়। জানালেন ইউনিয়নের সদস্য প্রদীপ সিং।
মজার কথা, খোদ পঞ্চায়েতও ইউনিয়নের এ দাবিকে সমর্থন করেছে। জেলার বিজেপি নেতা ও পি ধানকাদ বিহার থেকে পাত্রী এনে হরিয়ানার অবিবাহিত পুরষদের বিয়ের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এরপর থেকেই রাজনীতিবিদরা এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
কংগ্রেসের এক বলিষ্ট নেতা অবশ্য এ দাবিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, যখন কন্যাভ্রুণ হত্যা করা হয় তখন কেন বিয়ে নিয়ে ভাবে না এরা? বিয়ের বাজারে পাত্রী কোনো পণ্য নয় সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি।