ইতিহাসের পাতায় উঁকি দিলেও এই ভয়ঙ্করদের ধরা যায়নি আজও
কলকাতা টাইমস :
উনিশ শতকের শেষদিকে ইংল্যান্ডে একের পরে এক তরুণী খুন হতে থাকেন। লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল ডিস্ট্রিক্টের এই খুনির লক্ষ্য ছিল মূলত গণিকারা। ‘জ্যাক দ্য রিপার’ নামে পরিচিতিপ্রাপ্ত এই খুনিকে ধরা যায়নি কখনো। জ্যাক দ্য রিপার আজ এক উদাহরণ। তার পরে ইতিহাসের পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরেছে অসংখ্য সিরিয়াল কিলার। তাদের অধিকাংশ ধরা পড়লেও বেশ কয়েকজন ‘জ্যাক দ্য রিপার’-এর মতো উধাও হয়ে গিয়েছে। আজো ধরা পড়েনি ‘জ্যাক দ্য রিপার’ আর তার মতো আরো অনেকেই। দেখা যাক তাদেরই কয়েকজনকে—
• জ্যাক দ্য স্ট্রিপার : ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত সময়কালে জ্যাক দ্য রিপার-এর কায়দাতেই কেউ গণিকা-নিধন শুরু করেন। পটভূমিকা সেই ইংল্যান্ড। ৬-৮জন মেয়েকে হত্যা করে টেমস-এর জলে ভাসিয়ে দেয়। সব মৃতদেহ খুঁজেও পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিরাট চেষ্টা করেও ধরতে পারেনি ‘জ্যাক দ্য স্ট্রিপার’-কে। বেশ কয়েকটি হত্যার পরে সে একবারেই নীরব হয়ে যায়।
• দ্য আটলান্টা রিপার : ১৯১১ সাল নাগাদ আটলান্টায় ১৫-থেকে ২১ জন মহিলাকে হত্যা করে এই খুনি। তার শিকারের বেশিরভাগই ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকান। অনেকে এই সিরিয়াল কিলিংয়ের পিছনে বর্ণবৈষম্যকে দেখতে চান। ৬ জন সন্দেহভাজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কিছুই প্রমাণ করা যায়নি।
• দ্য জোডিয়াক কিলার : ১৯৬০-র দশকের শেষ দিক থেকে ১৯৭০-র দশকের গোড়া পর্যন্ত নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় সক্রিয় ছিল এই খুনি। সব মিলিয়ে ৩৭ জন মানুষকে হত্যা করে ‘জোডিয়াক কিলার’। কিন্তু তদন্তকারীরা তার বিরুদ্ধে মাত্র ৫টি হত্যা আর ২টি ইনজুরির অভিযোগ আনতে সমর্থ হন। ১৯৬৯-এর ৭ অগস্ট এই খুনি বিভিন্ন খবরের কাগজে এটা চিঠি পাঠায়। তাতে সে নিজেকে ‘জোডিয়াক’ বলে দাবি করে। সে জানায়, মানুষ মারতে দারুন মজা। আর মৃত্যুর পরে তার নাকি স্বর্গে পুনর্জন্ম ঘটবে। তখন এই নিহতরা তার দাসে পরিণত হবে। বিস্তর সন্দেহ, গুজব আর তোলপাড় মাথাচাড়া দিলেও আজ পর্যন্ত জোডিয়াক কিলারকে চিহ্নিত করা যায়নি।
• দ্য ফেব্রুয়ারি নাইন্থ কিলার : ২০০৬ সালে আমেরিকার সল্ট লেক সিটি-র সনিয়া মেজিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কেই, সনিয়ার সেই সময়ে তার গর্ভে সন্তান ছিল। ২০০৮ সালে ওই অঞ্চলে দামিয়ানা কাস্তিলো নামে আর এক মহিলাকে একইভাবে হত্যা করা হয়। উল্লেখ্য, দু’টি হত্যাকাণ্ডএ সংঘটিত হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। সেই অনুষঙ্গেই খুনিকেও ‘দ্য ফেব্রুয়ারি নাইন্থ কিলার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দু’টি হত্যার মোডাস অপারেন্ডিই ছিল একই রকমের। ২০১১ পর্যন্ত তোলপাড় হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো কিনারা হয়নি এই জোড়া খুনের।
• স্টোনম্যান : ১৯৮৯-এর জুন মাসে কলকাতার ফুটপাথে খুন হন জনৈক ব্যক্তি। ভারী পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়ে খুন করা হয় তাকে। পর পর ১৩ জনকে একই ভাবে হত্যা করার পরে মুম্বাইতে শুরু হয় একই রকমের সিরিয়াল কিলিং। অনেকের ধারণা, কলকাতার কিলারকে দেখেই অনুপ্রাণীত হয় মুম্বাইয়ের খুনি। সাধারত ফুটপাথবাসীরাই ছিলেন এই খুনির লক্ষ্য। বহু লোককে ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো সমাধান আজো মেলেনি ‘স্টোনম্যান’-রহস্যের।