বিয়ের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজেকে ৩ দিন বন্দি করে রেখেছিলেন বাজপেয়ী!
কলকাতা টাইমসঃ
ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী চিরকুমার ছিলেন। তার এই চিরকুমার থাকার পেছনে বিভিন্ন কারণ শোনা যায়। কিন্তু এই বাজপেয়ীকেও বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তার পরিবারের লোকজন। কিন্তু দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার জন্য সংসার করতে চাননি তিনি। তাই বিয়ে ভাঙতে আজব এক কান্ড করে বসেন বাজপেয়ী।
পাত্র হিসেবে মন্দ ছিলেন না বাজপেয়ী। গোয়ালিয়রের শিক্ষক কৃষ্ণ বিহারী বাজপেয়ী ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তার মেধাবী ছেলে অটল বিহারী হিন্দি, ইংরেজি, ও সংস্কৃত এই তিনটি ভাষায় ডিস্টিংশন পেয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে এমএ পাশ করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে। এরপর আইন পড়তে গেলেও দেশভাগের কারণে তা শেষ করতে পারেননি।
এমন পুত্রের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে পাত্রী খোঁজা শুরু হতেই বেঁকে বসেন অটল বিহারী। তখন তিনি আরএসএসের প্রচারক হিসেবে জীবন কাটাবেন ঠিক করে ফেলেছেন। চল্লিশের দশকে তিনি একে একে যোগ দিয়েছেন দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মাসিক পত্রিকা ‘রাষ্ট্রধর্ম’, আরএসএসের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘পাঞ্চজন্য’ তে। সাংবাদিকতা করেছেন ‘স্বদেশ’ এবং ‘বীর অর্জুন’ দৈনিকে।
বাজপেয়ীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রয়াত গোরেলাল ত্রিপাঠির ছেলে বিজয় প্রকাশ জানাচ্ছেন, ওই সময়েই নিজের বিয়ে বন্ধ করতে অটল বিহারী নিজেকেই বন্দি করে রেখে ছিলেন! ৩ দিন বন্দি ছিলেন তিনি। অটলবিহারী ও গোরেলালের বন্ধুত্ব হয় আরএসএস-এর মাধ্যমে। সেই গোরেলালই ছেলেকে বলেছেন অটলবিহারীর নিজেকে বন্দি বানানোর কাহিনী।
বাড়িতে বিয়ের তোড়জোড় চলছে জানতে পেরে তখনই পালিয়ে যান অটল বিহারী। আশ্রয় নেন গোরেলালের বাড়িতে অতিথিদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে। ভিতরে ঢুকেই বন্ধুকে বলেন বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিতে। সেই ভাবেই ৩ দিন কাটিয়ে দেন। খিদে পেলে বা বাথরুমে যাওয়ার দরকার পড়লে ভিতর থেকে দরজা ঠকঠক করে ডেকে নিতেন গোরেলালকে। কিন্তু সবকিছুই করা হতো অত্যন্ত গোপনে।
এভাবেই পরিবারকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তার বিয়ের চেষ্টা করা অর্থহীন। আর বন্ধু গোরেলালকে বলেছিলেন কেন তার বিয়েতে ভয়। অটলবিহারী বলেছিলেন, ‘আমি দেশের জন্য কাজ করতে চাই। সমাজের জন্য কাজ করতে চাই। বিয়ে কিংবা সংসার তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াক সেটা চাই না।’