রাতে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটের তাগিদ শরীরের একটি বিশেষ রোগের ইঙ্গিত
কলকাতা টাইমস :
রাত্রের ঘুমটা নির্বিঘ্ন হোক এই প্রত্যাশা থাকে সকলেরই। এবং রাতের ঘুমকে নির্বিঘ্ন করার জন্য সাধারণত সকলেই চেষ্টা করেন, শুতে যাওয়ার কিছু ক্ষণ আগে থেকে জল খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে। তা হলে আর মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার সমস্যায় পড়তে হয় না। কিন্তু জল কম খাওয়া সত্ত্বেও কি আপনাকে রোজ মাঝরাত্রে উঠতে হয় টয়লেটে যাওয়ার জন্য? এমনকী, কোনও কোনও রাত্রে কি একাধিক বারও হালকা হওয়ার জন্য উঠতে হয়? তা হলে কিন্তু আপনার শরীর নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ রয়েছে। অন্তত সাম্প্রতিক একটি ডাক্তারি সমীক্ষা সে রকমটাই জানাচ্ছে।
লন্ডনে আয়োজিত ইউরোপিয়ান সোশ্যাইটি অফ ইউরোলজিতে জাপানের নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি গবেষণাপত্র পেশ করেছেন। তাতে বলা হচ্ছে, মাঝরাত্রে বার বার টয়লেটে যাওয়ার তাগিদ বোধ করা শরীরের একটি বিশেষ রোগের ইঙ্গিত বহন করে। ডাক্তারি পরিভাষায় এই রোগের নাম নক্টুরিয়া। শরীরে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে লবণের পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তা হলে তাকে নক্টুরিয়া বলা হয়। আর রাত্রি বেলা বেশি বার টয়লেট যাওয়ার প্রয়োজন এই নক্টুরিয়া রোগেরই লক্ষণ। কিন্তু কত বার টয়লেট যাওয়াকে বেশি বার বলা চলে? গবেষকরা বলছেন, এটা ব্যক্তির শারীরিক গঠনের উপরে নির্ভর করে। কারণ প্রত্যেকটি মানুষের শরীরে নুনের প্রয়োজন এক রকমের হয় না। কিন্তু সাধারণ ভাবে বলা যায়, এক বারের বেশি যদি টয়লেট যেতে হয় রাত্রে, তা হলে তা শরীরে অতিরিক্ত নুনের লক্ষণ বলে বিবেচিত হতে পারে।
কিন্তু শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি নুন গেলে কী ক্ষতি হতে পারে? গবেষকরা বলছেন, নুন বেশি যাওয়ার অর্থ সোডিয়াম বেশি যাওয়া। আর সোডিয়ামের পরিমাণ যদি বেড়ে যায় শরীরে, তা হলে তার ফলে হাজারো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে যেমন মেদ বৃদ্ধি পায়, তেমনই বেড়ে যায় রক্তচাপও। পরিণামে কার্ডিওভ্যাস্কুলার ডিজিজ, অর্থাৎ হৃদয়ঘটিত রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। এমনকী কোনও কোনও গবেষক মনে করেন, অতিরিক্ত নুন খাওয়ার ফলে ক্যানসারের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভাজাভুজি এবং জাঙ্ক ফুডে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা নুন ব্যবহার করা হয়। কাজেই এই ধরনের খাবার খেলে শরীরে নুনের পরিণাম বাড়ে। লবণ বৃদ্ধির লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয় নক্টুরিয়া। কাজেই রাত্রে যদি একাধিক বার টয়লেট যাওয়ার অভ্যেস থাকে, তা হলে এখনই সতর্ক হন। অতিরিক্ত নুন-যুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। গবেষকদের দাবি, তা হলেই মুক্তি মিলবে নক্টুরিয়া থেকে।