শূন্য ডিগ্রিতেও আর জল জমে হবে না বরফ
কলকাতা টাইমস :
গরম পড়তে শুরু করেছে। এখন একটু স্বস্তির জন্য ফ্রিজ জল রেখে দেন সবাই। কিন্তু তৃষ্ঞার সময় যেই জল খেতে গেলেন দেখলেন জল আর নেই জমে বরফ। বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। নো টেনশন। সম্ভবত এ অবস্থার অবসান হতে চলেছে। সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ’র বিজ্ঞানীরা পানি বরফের পরিণত হওয়া রোধের উপায় আবিষ্কার করেছেন।
গবেষণার এই ফল ‘নেচার ন্যানোটেকনোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বলেন, তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন ফ্রিজে জল আর বরফে পরিণত হবে না। এমনকি তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে চলে গেলেও তরলের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন থাকবে।
গবেষকরা তাঁদের প্রথম ধাপে ‘লিপিড মেসোফেস’ নামক ‘নরম’ জৈব পদার্থের নতুন গঠন তৈরি করেন। এ জন্য তাঁরা নতুন শ্রেণির লিপিড (ফ্যাট অণু) তৈরির পরিকল্পনা করেন। এসব লিপিড স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেরাই একত্রিত হয় এবং অন্য ফর্মকেও একত্রিত করে।
এ ছাড়া সেগুলো প্রাকৃতিক ফ্যাট অণুর মতো আচরণ করে। মেসোফেস’ নামের ‘নরম’ জৈব পদার্থের গঠন নির্ধারণ করে লিপিডের গঠনসহ তাপমাত্রা ও জল ।
সাধারণ আইস ট্রেতে জল বরফে পরিণত হওয়ার জন্য সরু চ্যানেলে ফাঁকা জায়গা রাখা হয়। কিন্তু এই গবেষণায় আইস ট্রের সরু চ্যানেলে কোনো ফাঁকা জায়গা রাখা হয় না। ফলে জল একই অবস্থায় থাকায় তা বরফে পরিণত হতে পারে না।
গবেষকরা এরপর তরল হিলিয়াম ব্যবহার করে লিপিড মেসোফেসকে ঠাণ্ডা করতে তাপমাত্রা ২৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনেন। এ ক্ষেত্রেও দেখা যায় কোনো বরফ তৈরি হয়নি।
সংশ্লিষ্ট গবেষক প্রফেসর রাফায়েল মেজেঙ্গা ব্যাখ্যা করেন, ‘মূল বিষয় হলো জলে লিপিডের অনুপাত।’ অন্য এক গবেষক এহুদ লান্ডো বলেন, ‘এই লিপিড এতটা কঠিন হয়ে ওঠার জন্য যা কাজ করে তা হলো তাদের সংশ্লেষণ ও পরিশোধন।’
এই লিপিড মেসোফেসগুলো অন্যান্য গবেষকদের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এটি ক্রাইয়োজনিক ইলেকট্রন মাইক্রোস্কপি ব্যবহার করে ঝিল্লি অনুকরণযোগ্য পরিবেশে বড় জৈব যৌগগুলো ধ্বংস না করেই পৃথক, সংরক্ষণ এবং অধ্যয়ন করতে ব্যবহার করা যাবে।
প্রফেসর রাফায়েল আরো বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় ভবিষ্যত প্রকল্পগুলোর জন্য কীভাবে প্রোটিনগুলো তাদের আসল আকারে সংরক্ষিত রাখা যায় এবং খুব কম তাপমাত্রায় লিপিড ঝিল্লিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে তা নির্ধারণ করার উপায়টি বের হতে যাচ্ছে।’