বেশি খাবার না খেয়েও হচ্ছেন ফুটবল !

কলকাতা টাইমস :
আমাদের চারপাশে এমন বহু মানুষ আছেন, যাদের অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি খেতে দেখে আমরা তাজ্জব হয়ে যাই। কিন্তু এটা কি কখনও ভেবে দেখেছি যে, কোনও গুরুতর সমস্যার কারণে হয়তো তাঁরা এমনভাবে চিনি খাওয়া শুরু করেছেন? না, সাধারণত আমরা এত তলিয়ে ভাবি না। কিন্তু সত্যিই কি কোনও রোগের কারণে মানুষ বেশি পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া শুরু করেন? একেবারেই! সম্প্রতি নিউইয়র্কের ইথিকায় অবস্থিত কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ অধ্যাপক রবিন ড্যান্ডো তাঁর একটি গবেষণায় জানিয়েছেন, “যে সমস্ত ব্যক্তি খাবারে মিষ্টির স্বাদ ঠিক মতো পান না, তাঁরাই সাধারণত বেশী পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন।”
‘অ্যাপেটাইট’ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত সেই গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে যে, এই গবেষণাটি করতে ড্যান্ডো কয়েকজনের ওপর তাঁর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। পরীক্ষাটি চলাকালীন সাময়িকভাবে কয়েকজনের স্বাদগ্রন্থিতে এমন পরিবর্তন করা হয়েছিল যাতে তারা মিষ্টির স্বাদ অনুভব করতে না পারেন। আসলে সমীক্ষার শুরুতে কয়েক জনকে ‘জিমনেমা সিলভেস্ত্রে’ নামক একটি উপাদান মিশ্রিত চা খেতে দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে এরা জিভে মিষ্টি স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা হারিয়েছিল। এর পর দেখা যায় অংশগ্রহণকারীরা বেশী পরিমাণে চিনি মিশিয়ে চা খাচ্ছেন।
সে সময়ই গবেষকেরা বুঝতে পারেন যে অংশগ্রহণকারীদের স্বাদকোরক ঠিক মতো কাজ না করার জন্য তাঁরা অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি খেতে চাইছেন, যাতে তাঁরা মনের মতো একটি স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রবিন ড্যান্ডো তাঁর গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন যে, “অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকেই মিষ্টির স্বাদ না পাওয়ার কারণে বেশি বেশি করে চিনি এবং অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া শুরু করে।
ফলে শরীরে ক্যালরির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে তাদের ওজন বাড়তে শুরু করে। এর থেকে বোঝা যায়, যখন কেউ তাঁর স্বাদগ্রহণের ক্ষমতা হারায়, তখন তিনি স্বাদ গ্রহণের আশায় আরও বেশী করে চিনি জাতীয় উপাদানের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পরে। এই কারণেই বহু ব্যক্তি তাঁদের খাওয়ার পরিমাণও বাড়িয়ে তোলেন, যার ফলস্বরূপ আরও স্থুলাকার আকার ধারণ করেন। বৈজ্ঞানিক রবিন ড্যান্ডো আরও জানিয়েছেন যে, “স্বাদ কোরকের ক্ষমতা কমে যাওয়া একটি গুরুতর সমস্যার মধ্যেই পড়ে। কারণ স্বাদকোরকের ক্ষমতা হ্রাসের ফলে নেতিবাচক প্রভাব পরে আমাদের শরীরের ওপর”।