নানা ধরণের ঘুমের ফল কী জানেন
সুস্থ থাকার জন্য নিশ্চিন্ত ঘুম অবশ্য প্রয়োজনীয়। আর এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। ঘুম কম হওয়া বা অনিদ্রার সঙ্গে বহু বড় রোগের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।
কম ঘুম বা অনিদ্রার ফলে হৃদরোগ, অবসাদ, ওজন বাড়া, মানসিক অস্থিরতা, চঞ্চলতা, বিরক্তি, ক্লান্তি ইত্যাদি নানা রোগ ও সমস্যার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টার নিশ্চিন্ত ঘুম প্রয়োজন। ভালো ঘুমের সঙ্গে ত্বকের ভালো থাকারও সরাসরি যোগ রয়েছে। যাদের ঘুম কম হয়, তাদের মুখে কমবয়সেই বার্ধক্যের ছাপ পড়ে যায়।
ঘুমের ব্যাঘাতের জন্য দায়ী নানা কারণের মধ্যে অন্যতম হল আমাদের ঘুমের নানা ধরন। কেউ কেউ ঘুমের মধ্যে কথা বলেন, কেউ আবার তীব্র আওয়াজ শুনে হঠাৎ করে উঠে বসেন।
দেখে নিন, ঘুমের মধ্যে কী কী অদ্ভুত আচরণ করে মানুষ ও কী তার কারণ।
ঘুমের মধ্যে কথা বলা : ঘুমের মধ্যে অনেকেই কথা বলেন। কেউ কেউ স্পষ্ট কথা বলেন, কারও ক্ষেত্রে তা জড়িয়ে যায়। অত্যধিক ক্লান্তি বা অবসাদ, মদ্যপান ও অপরিমিত ঘুমের ফলে এই সমস্যা হতে পারে।
ঘুমের মধ্যে খাওয়া : অনেকেই ঘুমের মধ্যে খান। অনেকে সকালে বেড টি খান। আবার কমবয়সীদের অনেকসময়ই রাতে ঘুমের মধ্যেই খাইয়ে দিতে হয়। কারও ক্ষেত্রে সমস্যা বেড়ে গেলে নিজে উঠে গিয়ে খেয়ে নেন। এই সমস্যা বেশ গুরুতর।
যৌন সম্পর্ক : অনেকের ক্ষেত্রে ঘুমের মধ্যেই যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয় নিজের সঙ্গীর সঙ্গে। কিছুটা জ্ঞান থাকলেও পুরোপুরি জাগা অবস্থা তখন থাকে না। অনেকে ঘুমের মধ্যে যৌনতা বিষয়ক স্বপ্ন দেখলে এমনটা হয়ে থাকে।
ঘুমের মধ্যে পড়ে যাওয়া : এই ক্ষেত্রে কেউ স্বপ্নে দেখেন আকাশ থেকে বা পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে যাচ্ছেন। এই সময়ে ঘুমের মধ্য়ে ঝটকাও লাগে ও ওই ব্যক্তি উঠে পড়েন।
ঘুমের মধ্যে অসাড়তা : এর অর্থ হল, কোনও মানুষ জেগে গিয়েও নিজের হাত পা নাড়তে না পারা। ঘুম ভাঙার পরে অনেকের এমন হতে পারে। এক্ষেত্রে কারণ হল, শরীরের নানা অঙ্গের ঘুম ভাঙার আগে মস্তিষ্ক সচল হয়ে যায়। ফলে জেগে যাওয়া অনুভূত হলেও শরীরের সজাগ হতে খানিক সময় লাগে। ঘুমের মধ্যে হাঁটা এই সমস্যায় অনেক মানুষ ভোগেন এবং এই সমস্যা প্রাণঘাতী। এই সমস্যায় ভোগা মানুষ ঘুমের মধ্য়ে ঘটা ঘটনা মনে করতে পারেন না। অতিরিক্ত মদ্যপান, অত্যধিক ক্লান্তি, বিচলিত মন ও শরীর খারাপের ফলে হয়ে থাকে।
বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙা : এই সমস্যায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনে মানুষ জেগে ওঠে। অথবা কেউ কেউ তীব্র আলো দেখতে পান। ঘুমানোর সময়ে মস্তিষ্ক পুরোপুরি বিশ্রাম না পেলে এমনটা হতে পারে। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন অনেকেই ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখেন, আতঙ্কিত বোধ করেন। ফলে চিৎকার করে উঠে পড়েন। ঘুমের মধ্যে মাত্র ২ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য এসব স্থায়ী হয় যা ঘুমকে বরবাদ করে। অবসাদ, ক্লান্তি, দুশ্চিন্তা এমনকী মাথার চোটের ফলেও এমন হতে পারে।
ঘুমের মধ্যে গাড়ি চালানো : রাতে বহু গাড়ির চালক এই সমস্যায় ভোগেন। তন্দ্রা ভাবের মধ্য়েই অনেকে গাড়ি চালিয়ে যান যা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা : বেশিরভাগ মানুষই কম-বেশি নাক ডাকেন। নাক ডাকার নানা কারণ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোকের প্রবণতা, স্থূলত্ব বা কড়া ডোজের ওষুধ খাওয়া নাক ডাকায় অনুঘটকের কাজ করে।