মঙ্গলবার ভুল করে মাছ-মাংস খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
কলকাতা টাইমস :
হিন্দু শাস্ত্রে মঙ্গলবার আমিষ খাবার খেতে মানা করা হয় কেন জানেন? মঙ্গলবার কোনও প্রাণীকে মারলে পাপের ঘড়া ভরতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গৃহস্থের পবিত্রতাও ক্ষুন্ন হয়। আর একবার এমনটা হলে দেবতাদের ক্ষমতা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কমে শুভ শক্তির মাত্রাও। ফলে বাড়ির প্রতিটি কোনায় অশুভ শক্তির প্রভাব এতটা বেড়ে যায় যে একের পর খারাপ ঘটনা ঘঠার আশঙ্কা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ বাঁধার সম্মুখিন হওয়ার সম্ভাবনাও যায় বেড়ে।
শুধু যে মঙ্গলবারই আমিষ খাবার খেতে মানা করা হয়, এমন নয়। আসলে হিন্দু ধর্মে মঙ্গলবারের পাশাপাশি বৃহষ্পতি এবং শনিবারকেও বেজায় পবিত্র দিন হিসেবে বিবেচিত করা হয়ে থাকে। তাই তো এই দুটি দিনেও যদি মাছ-মাংসকে এড়িয়ে চলা যায়, তাহলে দারুন সব উপকার মেলে।
এখন প্রশ্ন হল, মঙ্গলবার যদি তেউ ভুল করে মাছ-মাংস খেয়ে ফেলেন, তাহলে কী কী ক্ষতি হতে পারে?
পরিবারে অশান্তি বাড়তে থাকে: এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে শ্রী হনুমানের আশীর্বাদ লাভ করলে পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগে। সেই সঙ্গে গৃহস্থের অন্দরে পজেটিভ শক্তির বিকাশ এত মাত্রায় ঘটে যে গুড লাক রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। আর একবার গুড লাক সঙ্গ নিলে জীবনের ছবিটা বদলে যেতে যে সময় লাগে না, তা বলাই বাহুল্য! কিন্তু মঙ্গলবার যদি মাছ-মাংস খান, তাহলে কিন্তু একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটতে শুরু করে। তাই তো মশাই সিদ্ধান্ত আপনার, দেবের আশীর্বাদে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে চান, নাকি…!
মনের জোর কমতে থাকে: শাস্ত্র মতে নিয়মিত হনুমানজির পুজো করলে মনের জোর বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। ফলে জীবন পথে চলতে চলতে সামনে আসা যে কোনও বাঁধা পেরতেই কষ্টই হয় না। তবে এমন আশীর্বাদ পেতে গেলে প্রতি মঙ্গলবার কিন্তু আমিষ খাবার খেতে হবে। তার পাশাপাশি সকালে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার জামা-কাপড় পরে হনুমানজির পুজো করলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! হবে। প্রসঙ্গত, এমনটা যদি প্রতি মঙ্গলবার করতে পারেন, তাহলে কিন্তু ফল পাওয়া যায় একেবারে হাতে-নাতে!
অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে: অনেকেই এমনটা বিশ্বাস করেন যে প্রতি মঙ্গলবার হনুমানজির পুজো করলে মনের মতো চাকরি তো মেলেই। সেই সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে চরম সফলতা লাভ করার সম্ভাবনাও যায় বেড়ে। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটে চোখে পরার মতো। কিন্তু সপ্তাহের এই বিশেষ দিনে আমিষ খাবার খেয়ে ফললে হনুমানজি বেজায় ক্ষুন্ন হন। ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি তো ঘটেই না, উল্টে মারাত্মত ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। তাই তো বলি বন্ধু এখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন যে আপনি হনুমানজির আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়ে এই সব সুখ হারাতে চান, নাকি প্রতি মঙ্গলবার নিরামিষ আহার করে জীবনকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান!
যা যা নিবেদন করতে হবে: আজ হনুমানজির পুজো করার সময় খেয়াল করে একটা তুলসির মালা তাঁকে নিবেদন করতে ভুলবেন না যেন! সেই সঙ্গে একটা লাল পতাকা যাতে শ্রী রাম লেখা রয়েছে, তা দেবের সামনে রাখতে হবে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে এমন ধরনের পতাকা নিবেদন করে দেবের আরাধনা করলে অনেক অনেক টাকার মালিক হয়ে উঠতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, আর যে যে জিনিসগুলি পুজোর সময় প্রয়োজন পরবে, সেগুলি হল কমলা সিঁদুর, জেসমিন তেল এবং মিষ্টির।
সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে যে যে দেবতার পুজো করা উচিত: মঙ্গলবার শ্রী হনুমানের পুজো করলে যেমন দারুন ফল পাওয়া যায়, তেমনি সোমবার হল শিবের দিন, বুধবার আইআপ্পা স্বামী, বৃহষ্পতিবার সাই বাবা এবং ভগবান বিষ্ণু, শুক্রবার মা লক্ষ্মী এবং পার্বতী, শনিবার শনিদেব এবং হনুমানজি এবং রবিবার হল ভগবান রাম এবং সূর্য দেবের দিন। প্রসঙ্গত, আপনারা যে দেব-দেবীর পুজো করতে মন চায়, সেই দিন নিরামিষ খাবার খাওয়া শুরু করুন করেন। দেখবেন দারুন ফল পাবেন।
আরও যে কারণে সপ্তাহের বিশেষ দিনগুলিতে মাংস খেতে মানা করা হয়…বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরকে সচল রাখতে এবং পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে প্রতিদিন মাংস খাওয়ার প্রয়োজন পরে না। বরং নিয়মিত এত মাত্রায় প্রোটিন খেলে শরীরের নানাবিধ সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষত, পাইলস, কিডনি স্টোন, কোলন ক্যান্সার, ব্লাড প্রেসার এবং হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। তাই তো ভগবানের আর্শীবাদ পেতে করুন, কী শরীরকে ঠিক রাখতে, সপ্তাহে তিন দিন যদি নিরামিষ খাবার খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার মেলে।