সিরিয়াকে কেন্দ্র করে কী বড়ো ধরণের যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্ব !
নিউজ ডেস্কঃ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প গত সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে বলেছেন, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সিরিয়ার ব্যাপারে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সিরিয়ার ব্যাপারে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, গত শনিবার সিরিয়ার পূর্ব গৌতার দুমা শহরে রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার পর মার্কিন সেনা কর্তারা দামেস্কের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
আমেরিকা এবং তার আরব ও ইউরোপীয় বন্ধুরা দাবি করেছে, সিরিয়ার সরকার ও সেনাবাহিনী দুমা শহরে রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে। তাদের ওই দাবির পর দামেস্ক ও তার মিত্রদের নিন্দা জানানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হলেও এখন পর্যন্ত এই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়নি এবং রাসায়নিক অস্ত্র হামলার সাথে দামেস্কের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্য আমেরিকা ও তার মিত্ররা এমন সব ঘটনা ঘটাচ্ছে যার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায় না।
১৫ বছর আগে আমেরিকা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ইরাকের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালিয়ে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। ওই আগ্রাসনের মূল নায়ক তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল পরবর্তীতে স্বীকার করেছেন, ইরাকে গণবিধ্বংসি অস্ত্র থাকার ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদে তারা যে তথ্য দিয়েছিল তা ছিল মিথ্যা।
বর্তমানে বিশ্ব সিরিয়ায় আরেকটি অনাকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর আগে খান শেইখুনে রাসায়নিক হামলার পর সিরিয়ার শাইরাত বিমান ঘাঁটিতে আমেরিকা যে হামলা চালিয়েছিল তার চেয়ে আরো বড় পরিসরে আমেরিকা সিরিয়ায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্টভাবে রাশিয়া ও ইরানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
তার এসব হুমকি কতটুকু কার্যকর করা হবে সে বিষয়টি বাদ দিয়ে তার উগ্র আচরণ থেকে বোঝা যায়, সিরিয়ার বিরুদ্ধে গঠিত জোট বর্তমানে পরাজয়ের সম্মুখীন। সেই কারণে তারা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধের আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমতিরও তোয়াক্কা করছে না। নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ায় হামলা চালানোর জন্য আমেরিকা ও তার মিত্রদের কোনো অনুমতি দেয়নি। এই অবস্থায় যে কোনো সামরিক হামলা সিরিয়ার জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে এবং ওই আগ্রাসন বিনা জবাবেও ছেড়ে দেয়া হবে না।
জাতিসংঘে রুশ রাষ্ট্রদূত গতকাল নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেছেন, আমরা ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিচ্ছি সিরিয়ায় হামলা হলে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া সহজ কিন্তু তা থেকে বেরিয়ে আসা অত্যন্ত কঠিন। ১৫ বছর আগে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় আমেরিকার জনগণকে এখনো তার মূল্য দিতে হচ্ছে। সিরিয়ায়ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে এর নেতিবাচক পরিণতি আমেরিকার পরবর্তী প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে।