বলে কি! এই তিন দেশের শিশুরা বেশি কাঁদে, জার্মানরা কম
কলকাতা টাইমস :
বিশ্বের নানা দেশের শিশুরা যে একই হারে কান্নাকাটি করে, তা নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কান্নার দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে ব্রিটেন, কানাডা ও ইতালির শিশুরা। অর্থাৎ এসব দেশের শিশুরা বেশি কাঁদে। অন্যদিকে জার্মান শিশুরা কম কান্নাকাটি করে।
শিশুর কান্না নিয়ে এ গবেষণাটি করেছেন ব্রিটেনের ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। তারা এ বিষয়টি অনুসন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিশুদের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ করেন। এ ধরনের গবেষণা এটিই বিশ্বে প্রথম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গবেষকরা বলেন, তারা তিন মাস ধরে শিশুদের পর্যবেক্ষণ করেছেন। এরপর সে তথ্যগুলো ব্রিটিশ মনোবিদরা বিশ্লেষণ করে গবেষণার এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
এ বিষয়ে গবেষণাটির প্রধান গবেষক ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটির ডায়েটার ওলকার বলেন, ‘জীবনের প্রথম কয়েক সপ্তাহে শিশুটি কতখানি কাঁদবে তাতে পার্থক্য দেখা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে এর মিল দেখতে পারি যেখানে কান্নাকাটি কম করা হয়। এছাড়া এটি পিতা-মাতার শিশু পরিচর্যার অভ্যাস ও গর্ভাবস্থাজনিত অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারে।’
গবেষকরা জানান, তারা শিশুদের ভাগ করেছেন কান্নার ভিত্তিতে। এক্ষেত্রে যারা দিনে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় কাঁদে তাদের বেশি কাঁদা শিশু হিসেবে বলা হচ্ছে। ব্রিটেন, কানাডা ও ইতালির শিশুদের এ মাত্রায় কাঁদতে দেখা যায়। তবে ডেনমার্ক ও জার্মানির শিশুদের এর চেয়ে অনেক কম কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।
গড়ে একজন শিশু জন্মের পর প্রথম দুই সপ্তাহে দিনে দুই ঘণ্টা কান্নাকাটি করেই কাটায় বলে জানান গবেষকরা। এরপর কান্নার পরিমাণ আরও কিছুটা বেড়ে দিনে সোয়া দুই ঘণ্টায় পৌঁছায়। তবে ছয় সপ্তাহ বয়সে সবচেয় বেশি সময় কান্নার বয়সটি পেরিয়ে এলে এরপর থেকে তা কমতে থাকে। সে সময় থেকে প্রতিদিন ১০ মিনিট করে কমতে থাকে কান্নার সময়। এভাবে ১২ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত কান্নার সময় কমতে থাকে।
তবে শিশুদের কান্নার এ হারে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। কোনো কোনো শিশু দিনে আধ ঘণ্টা কাঁদলেও কেউ কেউ আবার পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় কান্নাকাটি করে।
এ বিষয়ে গবেষণাটির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে পেডিয়াট্রিকস জার্নালে। এতে ৮৭০০ শিশুর ওপর অনুসন্ধান চালানো হয়। শিশুরা ছিল জার্মানি, জাপান, কানাডা, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনের।
এ গবেষণার উদ্দেশ্য হিসেবে কয়েকটি স্বাস্থ্যগত বিষয়ের উল্লেখ করেছেন গবেষকরা। অর্থাৎ কোনো শিশুর কান্নার মাত্রা যদি অতিরিক্ত কম বা বেশি হয় তাহলে তার পেছনে কোনো কারণ রয়েছে কি না, তা অনুসন্ধান করতে পারবেন গবেষকরা। এতে চিকিৎসকদের পক্ষে শিশুর সুস্বাস্থ নিশ্চিত করা সহজ হবে