কাল যদি চাঁদটা অদৃশ্য হয়ে যায় তাহলে কী হবে?
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
চাঁদ আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা এবং চিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকের ভুমিকা পালন করে। কিন্তু কাল যদি চোখের এক পলকেই পৃথিবীর চাঁদটি অদৃশ্য হয়ে যায় তাহলে কী হবে? বিষয়টি আমাদের নজরে পড়বে কি? বিষয়টি নিয়ে কি আমরা মাথা ঘামাবো?
যাইহোক, এটা নির্ভর করছে …..
আপনি কি জোয়ার পছন্দ করেন?
মধ্যাকর্ষণ শক্তি খুবই সোজাসাপ্টা একটি ব্যাপার। আপনি কোনো কিছুর যত কাছাকাছি হবেন ততই এর মধ্যাকর্ষণ শক্তি আপনাকে আরো বেশি টেনে ধরবে। তেমনি চাঁদের বেলায় একই কথা। পৃথিবীর ওপর চাঁদের প্রভাবের কথা বলতে গেলে আপনি বিষয়টিকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারেন: স্বয়ং পৃথিবীর ওপর, চাঁদের নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী সমুদ্র।
চাঁদের নিকটবর্তী সমুদ্র মাসের বিশেষ একটি দিনে অতিরিক্ত মধ্যাকর্ষণ শক্তির টান অনুভব করে। এতে সমুদ্র কিছুটা ফুলে ওঠে। সমুদ্রের এক দিগন্তের জলপ্রবাহ অন্য দিগন্তের জলপ্রবাহের বিপরীতে চাপ প্রয়োগ করে। যার ফলে চাঁদের নিকটবর্তী সমুদ্রে জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
আমাদের গ্রহের এক পাশে যখন জোয়ার থাকে অন্য পাশে তখন কী হয়? পৃথিবীর কঠিন উঁচু পাথুরে এলাকাগুলো সমুদ্রের চেয়েও চাঁদের বেশি কাছাকাছি অবস্থান করে। চাঁদের টানে পৃথিবীর ভূভাগও একটু নড়ে ওঠে। এতে চাঁদের দূরবর্তী সমুদ্রে ভাটার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর দুই পাশের সমুদ্রে দু্ই ধরনের সমুদ্র স্রোত লক্ষ্য করা যায়।
কিন্তু চাঁদ যদি কালই অদৃশ্য হয়ে যায় তাহলে কি সমুদ্রের জোয়ার-ভাটাও বন্ধ হয়ে যাবে? না; পুরোপুরি বন্ধ হবে না। কারণ সূর্যও আমাদের পৃথিবীর ওপর মধ্যাকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে থাকে।
আপনি কি একদিনে ২৪ ঘন্টা পছন্দ করেন?
বর্তমানের চেয়ে আগে পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর আরো দ্রুতগতিতে ঘুরতো। পৃথিবীর ওপর যে দানবীয় প্রভাবের বলে চাঁদ সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয় তারপরও পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৬ ঘন্টা। কিন্তু কী করে তা ২৪ ঘন্টা হল? এর কারণও চাঁদ! চাঁদের প্রভাবেই পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণনের গতি কমে আসছে।
আবার পৃথিবী যে নিজের অক্ষের ওপর ঘুরছে তার প্রভাবেও সমুদ্রের পানি এদিক-ওদিক হচ্ছে। যার ফলে সমুদ্রে যখন জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয় তখন তা সরাসরি চাঁদের নিচ বরাবর না থেকে একটু সামনে এগিয়ে থাকে।
সূতরাং দেখা যাচ্ছে যে, পৃথিবীর এমন জায়গায় সমুদ্রের পানির একটা অংশ গিয়ে আছড়ে পড়ে যেখানে তা থাকার কথা ছিল না। আর মধ্যাকর্ষণ শক্তির টান যেহেতু দুই তরফেই অনুভুত হয় সে কারণে সমুদ্রের ওই পানির টানে চাঁদও প্রভাবিত হয়। বেয়াড়া কুকুরের গলায় রশি বেঁধে যেমন করে হ্যাঁচকা টান মেরে মেরে বশে আনতে হয় তেমনি সমুদ্রের পানিও চাঁদের ওপর একটু একটু করে হ্যাঁচকা টান লাগিয়ে একে এর কক্ষপথের সর্বোচ্চে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, চাঁদ কিন্তু পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে। আর চাঁদকে দূরে ঠেলে দেওয়ার এই শক্তিটাও পৃথিবী থেকেই নির্গত হয়। এর ফলেও দিনে দিনে, হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণনের গতিও অল্প অল্প করে কমে আসছে। কারণ চাঁদকে দূরে ঠেলে দিতে গিয়ে পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণণ গতির শক্তি চাঁদের কক্ষপথ সংক্রান্ত শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
চাঁদ যদি অদৃশ্যও হয়ে যায় তাতেও মনে হয় না যে এই প্রক্রিয়া থামবে। আর এর ফল হয়তো ভালো নাও হতে পারে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে আপনি আপনার কর্মদিবসকে কতটা দীর্ঘ দেখতে পছন্দ করেন তার ওপর।
আপনি কি ঋতুবৈচিত্র পছন্দ করেন?
পৃথিবীর অক্ষরেখা একটুখানি ঢালু। আর সেই ঢালু রেখা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেও যেতে পারে। সব গ্রহেরই এমন হয়; তাতে আশ্চর্য হওয়ারও কিছু নেই। কিন্তু এই ঢাল যদি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয় তাহলে তা বিপদেরই কথা। যদি এমন হয় যে, অ্যান্টার্কটিকা ২৪ ঘন্টাই সূর্যের দিকে মুখ করে থাকল; অন্যদিকে, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ স্থায়ীভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে থাকল তাহলে কী ঘটবে? এভাবে কয়েকশত বছর থাকার পর যদি পৃথিবী পুনরায় উল্টে যায়? অবশ্য, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে অন্তত কয়েক শত কোটি বছর লাগবে।
তবে কালকেই যদি চাঁদ অদৃশ্য হয়ে যায় তাতে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ঋতু বৈচিত্র ধ্বংস হবে না। কারণ ঋতু বৈচিত্রের পেছনে শুধু চাঁদ নয় সূর্য সহ আরো অনেক মহাজাগতিক প্রভাবও কাজ করছে।
যাইহোক, এটা নির্ভর করছে …..
আপনি কি জোয়ার পছন্দ করেন?
মধ্যাকর্ষণ শক্তি খুবই সোজাসাপ্টা একটি ব্যাপার। আপনি কোনো কিছুর যত কাছাকাছি হবেন ততই এর মধ্যাকর্ষণ শক্তি আপনাকে আরো বেশি টেনে ধরবে। তেমনি চাঁদের বেলায় একই কথা। পৃথিবীর ওপর চাঁদের প্রভাবের কথা বলতে গেলে আপনি বিষয়টিকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারেন: স্বয়ং পৃথিবীর ওপর, চাঁদের নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী সমুদ্র।
চাঁদের নিকটবর্তী সমুদ্র মাসের বিশেষ একটি দিনে অতিরিক্ত মধ্যাকর্ষণ শক্তির টান অনুভব করে। এতে সমুদ্র কিছুটা ফুলে ওঠে। সমুদ্রের এক দিগন্তের জলপ্রবাহ অন্য দিগন্তের জলপ্রবাহের বিপরীতে চাপ প্রয়োগ করে। যার ফলে চাঁদের নিকটবর্তী সমুদ্রে জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
আমাদের গ্রহের এক পাশে যখন জোয়ার থাকে অন্য পাশে তখন কী হয়? পৃথিবীর কঠিন উঁচু পাথুরে এলাকাগুলো সমুদ্রের চেয়েও চাঁদের বেশি কাছাকাছি অবস্থান করে। চাঁদের টানে পৃথিবীর ভূভাগও একটু নড়ে ওঠে। এতে চাঁদের দূরবর্তী সমুদ্রে ভাটার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর দুই পাশের সমুদ্রে দু্ই ধরনের সমুদ্র স্রোত লক্ষ্য করা যায়।
কিন্তু চাঁদ যদি কালই অদৃশ্য হয়ে যায় তাহলে কি সমুদ্রের জোয়ার-ভাটাও বন্ধ হয়ে যাবে? না; পুরোপুরি বন্ধ হবে না। কারণ সূর্যও আমাদের পৃথিবীর ওপর মধ্যাকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে থাকে।
আপনি কি একদিনে ২৪ ঘন্টা পছন্দ করেন?
বর্তমানের চেয়ে আগে পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর আরো দ্রুতগতিতে ঘুরতো। পৃথিবীর ওপর যে দানবীয় প্রভাবের বলে চাঁদ সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয় তারপরও পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ৬ ঘন্টা। কিন্তু কী করে তা ২৪ ঘন্টা হল? এর কারণও চাঁদ! চাঁদের প্রভাবেই পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণনের গতি কমে আসছে।
আবার পৃথিবী যে নিজের অক্ষের ওপর ঘুরছে তার প্রভাবেও সমুদ্রের পানি এদিক-ওদিক হচ্ছে। যার ফলে সমুদ্রে যখন জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয় তখন তা সরাসরি চাঁদের নিচ বরাবর না থেকে একটু সামনে এগিয়ে থাকে।
সূতরাং দেখা যাচ্ছে যে, পৃথিবীর এমন জায়গায় সমুদ্রের পানির একটা অংশ গিয়ে আছড়ে পড়ে যেখানে তা থাকার কথা ছিল না। আর মধ্যাকর্ষণ শক্তির টান যেহেতু দুই তরফেই অনুভুত হয় সে কারণে সমুদ্রের ওই পানির টানে চাঁদও প্রভাবিত হয়। বেয়াড়া কুকুরের গলায় রশি বেঁধে যেমন করে হ্যাঁচকা টান মেরে মেরে বশে আনতে হয় তেমনি সমুদ্রের পানিও চাঁদের ওপর একটু একটু করে হ্যাঁচকা টান লাগিয়ে একে এর কক্ষপথের সর্বোচ্চে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, চাঁদ কিন্তু পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে। আর চাঁদকে দূরে ঠেলে দেওয়ার এই শক্তিটাও পৃথিবী থেকেই নির্গত হয়। এর ফলেও দিনে দিনে, হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণনের গতিও অল্প অল্প করে কমে আসছে। কারণ চাঁদকে দূরে ঠেলে দিতে গিয়ে পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘুর্ণণ গতির শক্তি চাঁদের কক্ষপথ সংক্রান্ত শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।
চাঁদ যদি অদৃশ্যও হয়ে যায় তাতেও মনে হয় না যে এই প্রক্রিয়া থামবে। আর এর ফল হয়তো ভালো নাও হতে পারে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে আপনি আপনার কর্মদিবসকে কতটা দীর্ঘ দেখতে পছন্দ করেন তার ওপর।
আপনি কি ঋতুবৈচিত্র পছন্দ করেন?
পৃথিবীর অক্ষরেখা একটুখানি ঢালু। আর সেই ঢালু রেখা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেও যেতে পারে। সব গ্রহেরই এমন হয়; তাতে আশ্চর্য হওয়ারও কিছু নেই। কিন্তু এই ঢাল যদি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয় তাহলে তা বিপদেরই কথা। যদি এমন হয় যে, অ্যান্টার্কটিকা ২৪ ঘন্টাই সূর্যের দিকে মুখ করে থাকল; অন্যদিকে, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ স্থায়ীভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে থাকল তাহলে কী ঘটবে? এভাবে কয়েকশত বছর থাকার পর যদি পৃথিবী পুনরায় উল্টে যায়? অবশ্য, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে অন্তত কয়েক শত কোটি বছর লাগবে।
তবে কালকেই যদি চাঁদ অদৃশ্য হয়ে যায় তাতে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ঋতু বৈচিত্র ধ্বংস হবে না। কারণ ঋতু বৈচিত্রের পেছনে শুধু চাঁদ নয় সূর্য সহ আরো অনেক মহাজাগতিক প্রভাবও কাজ করছে।