খাবার যখন উদ্ভট সব মামলার কারণ! আগে শুনেছেন ?
কানাডা ড্রাই-এ আদার পরিমাণ :
কানাডা ড্রাই পানীয়তে একটু বেশিই আদা ব্যবহার করা হয় বরাবর। চলতি বছরেই জুলি ফ্লেচার হঠাৎ খেয়াল করলেন যে, পানীয়টির ক্যানের গায়ে কোথাও আদার কথা উল্লেখ করা হয়নি। পানীয়টির নির্মাতারা জানায়, ‘প্রাকৃতিক ফ্লেভার’ ব্যাপারটি উল্লেখ করা আছে ক্যানের গায়ে। ওটার ভেতরেই আদা পড়ে। এছাড়াও কানাডা ড্রাইয়ে ল্যাব টেস্টেও যে কোনো আদা পাওয়া যায়নি সেটা উল্লেখ করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয় মিসৌরি থেকে। সেখানেও পানীয়টির নির্মাতারা জানায় যে, কোন ল্যাব টেন্টে আদা পাওয়া যায়নি মানে এই নয় যে, তারা আদা ব্যবহার করেন না। পরীক্ষার ফলাফল ভুলও হতে পারে।
পপিসে ছুরি দেয় না :
আহ! ওরা খাবার দেবে, আর সাথে একটা প্লাস্টিকের ছুরি দেবে না? মিসিসিপির বাসিন্দা পল নিউটন জুনিয়র এমন এক অভিযোগ নিয়ে আসেন ২০১৫ সালে পপিস চিকেন এন্ড বিস্কুটের বিরুদ্ধে। পপিস থেকে ভাত, মুরগীর মাংস, বিস্কুট অর্ডার করেছিলেন পল। সেখানে কেবল চামচ দেওয়ায় একটা সময় মুরগীর টুকরো পলের গলায় আটকে যায় এবং দ্রুত হাসপাতালে নিতে হয় তাকে। এই ভোগান্তির পর সরাসরি আদালতে মামলা করে দেন পল পপিসে ছুরি না রাখার জন্য।
এক টুকরো চিজের দাম :
এবার আর যে কেউ নয়, আইনি অভিযোগ এসেছে ম্যাকডোনাল্ডসের বিরুদ্ধে। এ বছরই ‘লিওনার্ড ওয়ার্নার’ ম্যাকডোনাল্ডসের বার্গার খেতে গিয়ে দেখেন সেখানে তার কাছ থেকে এক ডলার বেশি নেওয়া হয়েছে চিজের জন্য। অথচ, বার্গারে বাড়তি চিজ থাকার কথা ছিল না। লিওনার্ড হিসেব করে দেখতে পান যে, কেবল তিনি একাই নন। ম্যাকডোনাল্ডসের কিছু ভুলের কারণেই এমন কয়েক মিলিয়ন মানুষ বাড়তি এক ডলার দিয়ে আসছেন। যেই ভাবা সেই কেস! অবশ্য ম্যাকডোনাল্ডস এখনো নিশ্চিত যে, এই কেসে তারাই জিতবে।
কেলগের ফলহীন ফ্রুট লুপ :
২০০৯ সালের কথা। রয় ওয়ারবেল নামক একজন মামলা করে দেন কেলগের বিরুদ্ধে। তার অভিযোগ ছিল এই যে, কেলগের ফ্রুট লুপে কোন আসল ফল নেই। তবে এই অভিযোগ খুব দ্রুত খারিজ হয়ে যায়। রয়কে জানানো হয় যে, আসল ফল কখনোই লুপ হিসেবে পরিবেশন করা সম্ভব নয়। আর ফ্রুট (froot) লেখা ছিল কেলগের পণ্যের উপরে, ফ্রুট (fruit) নয়। তবে এই একই ব্যাপারে মোট চারটি মামলা হজম করতে হয়েছিল কেলগকে।
গ্রীক ইয়োগার্ট কি গ্রীসের?
ঠিক এই প্রশ্নটিই তোলেন অ্যালান চং আর ব্যারি স্টল্টজ। ২০১৪ সালে মোট দুইটি ব্যাপার নিয়ে গ্রীক ইয়োগার্টের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা। কারণগুলো ছিল- প্রথমত, গ্রীক ইয়োগার্টের নামের সাথে গ্রীক শব্দটি থাকতে পারে এমন কোন কারণ নেই। এতে থাকা জিনিসপাতি মোটেও গ্রীস থেকে আসা বা গ্রিসের রেসিপি অনুযায়ী তৈরি করা হয় না।
দ্বিতীয়ত, গ্রীক ইয়োগার্টের গায়ে জিরো লেখা থাকে। এই জিরো মানে অনেকেই ভাবেন এতে চিনির পরিমাণ জিরো। যেটা আসলে তা নয়। এটি মূলত জিরো ফ্যাটের নির্দেশক। তবে সেটা প্যাকেটের গায়ে লিখে রাখেন না নির্মাতারা। বেশ ঝামেলা হয় মামলাটি নিয়ে। তবে একটা সময় আপোষে চলে আসেন দুইপক্ষ।
ফাস্টফুড খেলে আমি মোটা হয়ে যাই :
২০০২ সালে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী সিজার বারবার কেএফসি, ম্যাকডোনাল্ডস, বার্গার কিং ইত্যাদি সমস্ত ফাস্ট ফুড কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করে দেন। ফাস্ট ফুড খাওয়ার সময় উপাদানের ব্যাপারে পুরোটা জানানো হয় না ভোক্তাকে, ফলে মোটা হয়ে যায় তারা- এমনটাই অভিযোগ ছিল বারবারের। প্রথমবারের মতো আইনি একটি পদক্ষেপ ছিল জাঙ্ক ফুডের বিরুদ্ধে। ২০০৩ সালে কেসটি বাতিল করে দেওয়া হয়।
কোনো খাবার নিয়ে আপনার এমন নেতিবাচক স্মৃতি রয়েছে কী? করবেন নাকি মামলা কোনো খাবার কোম্পানির বিরুদ্ধে?