যখন জলের ওপর নাম মরণ
কলকাতা টাইমস :
শিরোনামটি পড়ে হয়তো আঁতকে উঠেছেন। কারণ জলের অপর নাম জীবন হিসেবেই জানতেন এতকাল। জল খাওয়ার নানান উপকারিতার কথাও অনেক শুনেছেন এতোদিন। কিন্তু অতিরিক্ত জল খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে হয়তো আপনি জানতেন না।
একটি ঘটনা দিয়েই বর্ণনা করা যাক। ২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়ায় এক মহিলা হঠাৎ করেই মারা যান। তিনি ছিলেন তিন সন্তানের মা। তার মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে ডাক্তাররা অতিরিক্ত জলকেই দায়ী করেছিলেন। কারণ মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তিনি একটি জল খাওয়ার প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে এসেছিলেন। প্রতিযোগীতায় তিনি প্রায় ২ গ্যালন জল খেয়ে ফেলেছিলেন।
‘কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়’ এই কথাটি অহরহই শোনা যায়। জল খাওয়ার ক্ষেত্রেও কথাটি একেবারে সত্যি। জল খেয়ে মৃত্যুবরণের ঘটনা একটি নয়। অনেকবারই এমন অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শুধু মাত্র অতিরিক্ত পরিমাণে জল গ্রহণের কারণে।
অতিরিক্ত জল শরীরে সৃষ্টি করে বাড়তি চাপ যা শরীরে নানান বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে এবং মৃত্যুও ঘটে। জেনে নিন অতিরিক্ত জল পান করলে শরীরে কিভাবে বিরূপ প্রভাব পড়ে সেই সম্পর্কে।
১) অতিরিক্ত জল গ্রহণ করলে আপনার শরীরের মোট রক্তের ভলিউম বেড়ে যেতে পারে। আর রক্তের ভলিউম বেড়ে গেলে পুরো শরীরেই এর প্রভাব পরবে। বিশেষ করে হার্ট ও ব্লাড ভেসেল এর উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে রক্তের এই বাড়তি ভলিউম।
২) আমাদের কিডনি প্রতিদিন একটি ধরাবাধা নিয়মে জল ফিল্টার করে। অতিরিক্ত জল খেলে কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত চাপের ফলে শরীরের ফিল্টারেশন সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে দুটি কিডনিই কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকল হয়ে যেতে পারে যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।
৩) খুব কম সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত জল পান করে ফেললে রক্তের ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা হঠাৎ করে অতিরিক্ত নেমে যায়। কিন্তু কোষের ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রা ঠিক থাকে। ফলে রক্ত ও কোষের ইলেক্ট্রোলাইটের মাঝে ভারসাম্য রাখার জন্য রক্তের কিছু জল কোষে ঢুকে যায় এবং শরীর হঠাৎ করেই ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই প্রভাব মস্তিষ্কের উপরের পড়ে এবং ফলাফল স্বরূপ মাথা ব্যাথা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দেয়।
কতটুকু জল খাবেন: সুস্থ থাকার জন্য জল তো খেতেই হবে। জল একেবারে কম খেলেও শরীরে নানান সমস্যা দেখা দেয়। তাই সুস্থতার জন্য প্রতিদিন ৮/১০ গ্লাস জল খাওয়া প্রয়োজন। তবে একবারে বেশি জল না খেয়ে কিছুক্ষণের বিরতি দিয়ে খেতে হবে জল ।