কে বলল হার্বাল মানেই নিরাপদ ? হতে পারে ক্যান্সারও

কলকাতা টাইমস :
বহু সাধারণ মানুষের ধারণা, গাছগাছড়া থেকে তৈরি ভেষজ বা হার্বাল বলতে নিরাপদ ওষুধ কিংবা খাবারকেই বোঝায়। কিন্তু ভেষজ উপাদান মানেই যে, নিরাপদ নয় তা জানা গেছে এক গবেষণায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে আইএএনএস।
গাছপালা থেকে তৈরি ভেষজ পণ্যেও রয়েছে বিষাক্ত নানা উপাদান। এগুলোর কোনো কোনোটি ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে। আর এ কারণে এসব উপাদানকে নিরাপদ ভাবার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন বেয়লর কলেজ অব মেডিসিন ও স্ট্রোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। তারা বিভিন্ন গাছপালার উপাদানগুলোকে পরীক্ষা করে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের এ গবেষণাটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ইএমবিও রিপোর্টস জার্নালে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভেষজ একটি উপাদান অ্যারিস্টোলোশিয়া। এটি মানুষের দেহে অ্যারিস্টোলোশিক এসিড নেফ্রোপ্যাথি (এএএন) সমস্যার কারণ হতে পারে। আর এ সমস্যায় ইন্টারস্টিশিয়াল নেফ্রাইটিস হতে পারে, যা মূত্রতন্ত্রে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল প্রেসক্রিপশন ডেটাবেইস থেকে দেখা যায়, ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে আট মিলিয়ন মানুষকে হার্বাল পণ্য দেওয়া হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাইওয়ান ও চীনে প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ এএএন-এ আক্রান্ত।
এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন গবেষক ডোনাল্ড মার্কাস। তিনি বেয়লর অ্যান্ড আর্থার গ্রলম্যানে প্রফেসর এমিরেটাস। এ ছাড়া তিনি স্টোনি ব্রুকস ইউনিভার্সিটির ফার্মাকোলোজিক্যাল সায়েন্সেস-এর প্রফেসরও বটে। তিনি জানান, সাধারণত কিছু মানুষের মাঝে অ্যারিস্টোলোশিয়া গ্রহণের প্রবণতা দেখা যায়। আর তাদের মাঝেই অ্যারিস্টোল্যাকটাম বেশি দেখা যায়। এটি মূলত অ্যারিস্টেল্যাশিয়া ও মূত্রতন্ত্রের টিসুর ডিএনর একটি জটিলতা। এ জটিলতার কারণে টিপি৫৩ টিউমার সৃষ্টি হতে পারে। এটি কিডনি ক্যান্সারেরও কারণ হতে পারে।
অ্যারিস্টোলোশিয়া উপাদানটি দুই হাজার বছর ধরে হার্বাল চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এর সঙ্গে মূত্রতন্ত্রের মারাত্মক রোগের ঝুঁকি রয়েছে সে সময় থেকেই। গবেষকরা বলছেন, এটি অনুমান করা যায় যে, একই ধরনের আরও বিভিন্ন উপাদান রয়েছে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আফ্রিকা ও এশিয়াতে বহুকাল আগে থেকেই বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এসব উপাদান নিয়ে সঠিকভাবে গবেষণার ঘাটতি রয়েছে। আর এসব উপাদান বিশ্বব্যাপী নানা স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই এসব ভেষজ উপাদান ব্যবহারের আগে তা নিয়ে ভালোভাবে অনুসন্ধান করা উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা।