শিকারী না হলে কিন্তু ঘোর বিপদ
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আট ঘন্টার বসে চাকরি করলে কিন্তু জীবন শেষ হবে অনেক তাড়াতাড়ি। বুঝতে পারলেন না তো? একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে দিনের বেশিটা সময় বসে থাকলে নানা রকমের জটিল কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ০.২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, বসে থাকার সময় প্রতি ঘন্টায় আমাদের পেটের চর্বি বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই সাবধান! গবেষণায় আরও দেখা গেছে যারা বসে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন, তাদের কোমরের মাপ, সেই সব মানুষদের থেকে বেশি হয়, যারা বসে কাজ করেন না। আর একথা তো সকলেরই জানা যে শরীরের ওজন যত বাড়বে, তত কিন্তু মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। আর একবার যদি ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের মধ্য়ে কোনওটা শরীরের বাসা বেধেঁ বসে, তাহলে কিন্তু বিপদ। তাই নিজের এবং পরিবারের কথা ভেবে এখন থেকেই সাবধান হওয়াটা জরুরি।
এখানেই শেষ নয়, টানা যদি কেউ পাঁচ ঘন্টা বসে থাকেন, তাহলে প্রতি ঘন্টায় তার শরীরে এল ডি এল বা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে কমে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রাও, যা শরীরকে ভাল রাখতে জরুরি ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের প্রফেসর উইলিয়াম টিগবে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে একবার বলেছিলেন, দীর্ঘক্ষণ সেকেন্ডারি পসচার, মানে বসে থাকলে কোমরের মাপ বাড়তে শুরু করে। আর এমনটা হলেই শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা, অর্থাৎ চর্বির মাত্রা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে ভাল কোলেস্টরলের মাত্রা কমে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাহলে উপায়!
যাদের বসে কাজ করতে হবেই তারা কী করবেন? ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ওবেসিটিতে প্রকাশিত একটি পিরোর্টে বলা হয়েছে, যারা ৫ ঘন্টার বেশি বসে কাজ করেন, তারা যদি প্রতিদিন ১৫,০০০ পদক্ষেপ বা স্টেপস নেন, মানে ৭-৮ মাইল হাঁটেন, তাহলে এই সব রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আসলে বিবর্তনের সময় আমাদের শরীর এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যে তাকে বেশিক্ষণ বসিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই যদি কেউ জোর করে এমনটা করে তাহলে শরীরের উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই তো দিনে কম করে ৭-৮ ঘন্টা নিজের পায়ের উপর দাঁড়ানো একান্ত প্রয়োজন, যেমনটা শিকারিরা করে থাকেন। কেন শিকারির প্রসঙ্গ টানলাম বলুন তো? আমাদের পূর্বপুরুষরা কিন্তু শিকার করে দিনযাপন করতেন, তারা কিন্তু এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতেন না। তাই আমাদের শরীর সেই ধরনের পসচারের সঙ্গেই পরিচিত, বসার সঙ্গে নয়।