আপেল, বিট এবং গাজর এক সঙ্গে খান নাকি, কি হতে পারা জানেন ?
কলকাতা টাইমস :
প্রতিদিন সকালে উঠে শরীরকে বিষমুক্ত করেন নাকি? না, তেমন তো কিছু করা হয়ে ওঠে না। আর কিভাবেই বা করবো সে সম্পর্কেও তো জানা নেই! জানি এমন পরিস্থিতি প্রায় সকলেরই। তাই তো আজকের এই প্রবন্ধে শরীরকে বিষ মুক্ত করার একটা সহজ ঘরোয়া পদ্ধিত সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। সারা দিন ধরে নানাভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে থাকতে নানাবিধ টক্সিক উপাদান। যাদের সহজ ভাষায় বিষ বলা যেতেই পারে। এইসব টক্সিক উপাদানদের যদি ঠিক সময়ে শরীর থেকে বের করে দেওয়া না যায়। তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
কারণ এই সব বিষ শরীরে প্রতিটি কোণায় পৌঁছে গিয়ে নানা ধরনের ক্ষতি সাধন করে থাকে। এমনকি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ায়। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন এই প্রবন্ধে আলোচিত পানীয়টি খেতে হবে। কারণ এই পানীয়টি টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে ধুয়ে-মুছে বার করে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন এই পানীয়টি বানাবেন কিভাবে, তাই তো! এই ঘরোয়া মহৌষধিটি বানাতে প্রয়োজন পরবে গাজর, বিট এবং আপেলের। এই তিনটি উপাদান মিলে এমন খেল দেখাবে যে একদিকে যেমন শরীরের বিষ মুক্তি ঘটবে, তেমনি মিলবে আরও অনেক উপকারও। যেমন…
হার্টের উন্নতি : পানীয়টি বানাতে ব্যবহৃত গাজর এবং বিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লুটেইন এবং বিটা-ক্যারোটিন। এই দুটি উপাদান হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে হৃদপিন্ডকে সুস্থ-সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে আপেলে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদান রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-কে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে স্বাভাবিকবাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
ঝলমলে ত্বক : শরীরে টক্সিক উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে প্রথমেই ত্বকের উপর তার প্রভাব পরে। এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে স্কিন টোন খারাপ হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার কারণে ত্বকের বয়সও বাড়তে থাকে। আপনি কি চান এমনটা আপনার ত্বকের সঙ্গেও ঘটুক? নিশ্চয় না! তাহলে কাল সকাল থেকেই আপেল, বিট এবং গাজর দিয়ে বানানো এই পানীয়টি পান করা শুরু করুন। দেখবেন ত্বকের বয়স তো কমবেই। সেই সঙ্গে ব্রণ, ব্ল্যাক হেডস সহ একাধিক ত্বকের রোগের প্রকোপও কমে যাবে। আসলে এই তিনটি সবজির অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি : একাদিক গবেষণায় দেখা গেছে এই পানীয়টি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে বেশ কিছু উপকারি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে স্মৃতিশক্তির সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধির ধারও মারাত্মক বেড়ে যায়। তাই তো ছোট থেকেই বাচ্চাদের এই পানীয়টি খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে: দিনের বেশিরবাগ সময়ই কি কম্পিউটারের সামনে কাটাতে হয়? তাহলে তো বন্ধু এই পানীয়টিকে আপনার রোজের সঙ্গী বানানো মাস্ট! কারণ এই ঘরোয়া ওষুধটি চোখের উপর পরা কম্পিউটার স্কিনের কু-প্রভাবকে কমিয়ে আনে। সেই সঙ্গে ড্রাই আইয়ের মতো সমস্যা কমাতে এবং সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, এই পানীয়টি চোখের অন্দরে থাকা সিলিয়ারি মাসলকে শক্তিশালী করে তোলে। এই পেশিটির শক্তি যত বৃদ্ধি পায়, তত চোখের ফোকাল লেন্থের উন্নতি ঘটতে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি : সুস্থ জীবনের স্বপ্ন পূরণ করতে চান কি? তাহলে তো বন্ধু গাজর, বিট এবং আপেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই হবে। কারণ এই তিনটি প্রকৃতিক উপাদানের শরীরে উপস্থিত প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিজেন্ট এবং বিশেষ কিছু ভিটামিন রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে সামান্য থেকে সামান্যতর রোগও শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। এবার বুঝেছেন তো এই পানীয়টি কতটা উপকারি।
ওজন কমায়: ওজন মাত্রা ছাড়ালে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না। তাই তো ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা সব সময়ই একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে নানা দিক থেকে সাহায্য করতে পারে এই পানীয়টি। কারণ আপেল, বিট এবং গাজরে উপস্থিত ফাইবার অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর কম খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে কম মাত্রায় ক্যালরি প্রবেশ করে। আর কম ক্যালরি মানে ওজন নিয়ন্ত্রমে চলে আসা, তাই না! প্রসঙ্গত, এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদান হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর একবার হজম ক্ষমতা বেড়ে গেলে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়। এই ভাবেও এই পানীয়টি দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।