বিছানায় শুয়ে বই পড়ে কি করছেন জানেন
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
চোখের জন্যই আমাদের চারপাশের পৃথিবী আরো সুন্দর। চোখ সব অঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে সেনসিটিভ অঙ্গও বটে। ফলে খুব অল্পেই জড়িয়ে পড়তে পারে যেকোন দুর্ঘটনায়। খুব অল্পেই কোনওকিছু থেকে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে চোখ। যেমন শুয়ে বই পড়া চোখের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর, তা নিয়েও এখন চলছে জোর গবেষণা। অনেক বইপ্রেমীই আছেন যাদের অভ্যাস হল বসে, শুয়ে, ট্রেনে, বাসে বই পড়া। সবসময় যে বইয়ের থেকে চোখের দূরত্ব সমান থাকে তা নয় , এমনকি সঠিক অ্যাঙ্গল বজয় রেখেও যে পড়া হয় তাও না। কিন্তু ত সত্ত্বেও বই পড়া অনেক সময়ই এড়ানো যায় না।
কী কী সমস্যা হতে পারে এইভাবে বই পড়লে? ডাক্তাররা কিন্তু অনেকরকম ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তার কিছুরই হদিশ রইল এই প্রতিবেদনে।
১। চোখের উপর চাপ: বই পড়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানুরা সবসময় পরামর্শ দেন বইয়ের থেকে বা যা থেকে পড়ছেন তার থেকে চোখের দূরত্ব অন্তত যেন পনেরো ইঞ্চি হয়। শুধু তাই নয় পড়ার জন্য চোখের সঙ্গে বইয়ের অ্যাঙ্গল থাকতে হবে ষাট ডিগ্ৰি। যারা বাইফোকাল চশমা পড়ে বই পড়েন তাঁদের ক্ষেত্রে ডাক্তাররা এর থেকে সামান্য কম কোণে পড়ার পরামর্শ দেন। শুয়ে বই পড়ার সময় বইয়ের দিকে যে কোণে তাকানো হয় তাতে বইয়ের সঙ্গে ষাট ডিগ্ৰি কোণ থাকে না। ফলে চোখের উপর চাপ পড়ে। এতে অল্পক্ষণ পড়ার পরেই ক্লান্তি হয় শরীরে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে, অনেকক্ষেত্রে তাও হয়ে থাকে। পাশ ফিরে শুয়ে যদি বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন তবেও কিন্তু সমস্যা থেকেই যায়। আমাদের চোখ খোলা বন্ধ হয় চোখের চারপাশের পেশিগুলোর জন্য নিয়মিত কাজের জন্য। পাশ ফিরে হলে একদিকের পেশির উপর চাপ বেশি পড়ে। ফলে পেশিগুলো সহজে কাজ করতে পারে না। এমনকি এতে চোখের অংশে কমে যেতে পারে রক্তচলাচল। চোখের উপর অত্যাধিক চাপ পড়ায় যে অসুবিধাগুলো হয় তার পোশাকি নাম অ্যাস্থেনোপিয়া। এই নামের সঙ্গে পরিচিত না হলেও এই কুঅভ্যাসগুলোর সঙ্গে পরিচিত প্রায় সকলেই।
২। চোখ লাল হওয়া: অনেকে ভাবেন রাতে বিছানায় শুয়ে না ঘুমিয়ে বই পড়ার কারণে চোখ লাল হয়, কিন্তু মেডিকেল সায়েন্স বলছে অন্য কথা। তাদের কথায়, চোখের পেশিগুলোয় অত্যাধিক চাপ পড়ে বলেই চোখ এমন লাল হয়ে যায়। এও অ্যাস্থেনোপিয়া রোগেরই একটি বিশেষ লক্ষণ। এর ফলে চোখের অশ্রুগ্ৰন্থির জল শুকিয়ে যেতে পারে। অশ্রুগ্ৰন্থির জল চোখের মণিকে আর্দ্র রাখে যাতে বাইরের কোনও ব্যাকটেরিয়া সহজে চোখে প্রবেশ করে কোনওরকম ইনফেকশন না ঘটাতে পারে। কিন্তু চোখের জল শুকিয়ে গেলে চোখের মণিতে বাইরের বায়ুর ধূলোর কণা সহজেই প্রবেশ করতে পারে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই ভালো নয়।
৩। মাথার ব্যথা: শুয়ে বই পড়লে চোখে তো চাপ পড়েই, একইসঙ্গে সেই চাপ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মাথাতেও। বিভিন্ন নার্ভ আমাদের ব্রেনে গিয়ে ভিশনারি সেন্স তৈরি করে। তাই চোখের উপর অস্বাভাবিক চাপ পড়লে নার্ভগুলো ঠিকমত কাজ করে না। উপরন্তু চোখের পেশির কাজে বাধা তৈরী হওয়ায় তা প্রভাব ফেলে মাথার পেশিতেও। এতে কমে যেতে পারে ঘুমের পরিমাণ। অ্যাংজাইটি, অস্থিরতা ইত্যাদিও বাড়তে থাকে দিনের পর দিন যা কখনোই ওষুধ খেয়েই কমবার নয়। শুয়ে বই পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা যাবে এমন আশঙ্কার কথা চক্ষু বিশেষজ্ঞদের মুখে এখনও অবধি শোনি যায়নি। তবে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিগ্ৰস্ত হওয়ার কথা বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই বলে থাকেন। তাই বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগেই সাবধান হওয়া ভালো।