এক-দুই নয় পুরো ১৪৫ ডিগ্রি নিয়ে তিনি এ কালের বিদ্যাসাগর
শিক্ষাজীবনে তিন থেকে চারটি ডিগ্রি অর্জন করতে গিয়েই আমরা সাধারণত হাঁপিয়ে উঠি। কিন্তু প্রফেসর ভিএন পার্থিবান ১৪৫টি অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তার এসব ডিগ্রির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-আটটি মাস্টার্স অব ল ডিগ্রি (এমএল), দশটি মাস্টার্স অব আর্টস ডিগ্রি (এমএ), আটটি মাস্টার্স অব কমার্স ডিগ্রি (এমকম), তিনটি মাস্টার্স অব সায়েন্স ডিগ্রি (এমএসসি), বারোটি রিসার্চ ডিগ্রি (এম.ফিল) এবং নয়টি মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রি (এমবিএ)। পাশাপাশি তিনি চেন্নাইয়ের বিভিন্ন কলেজে একশ-এর বেশি বিষয়ে শিক্ষাদান করেন।
কোথা থেকে তিনি এমন প্রাণশক্তি পেলেন যা দিয়ে তিনি এতগুলো ডিগ্রি অর্জন করলেন? এ প্রসঙ্গে ৫৫ বছর বয়সি পার্থিবান বলেন, ‘আমি পড়ালেখাটা খুব উপভোগ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ডিগ্রি অথবা ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য পরীক্ষার প্রস্তুতি নিই।’
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পার্থিবান বিভিন্ন কোর্সে আবেদন এবং ডিগ্রি অর্জনের এ বিষয়টি চালিয়ে আসছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সবাই যখন অবসাদ দূর করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন পার্থিবান তখন পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে ব্যস্ত থাকেন। যে কারণে এখন অনেক পরীক্ষক মুখ দেখেই তাকে চেনেন।
চেন্নাইয়ের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম পার্থিবানের। সে কারণে কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করাটা তার জন্য বেশ কঠিন ছিল। এ ছাড়া এই ডিগ্রি অর্জন করতে গিয়ে অনেক পরীক্ষায় অকৃতকার্যও হতে হয়েছে তাকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই হার মানেননি তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রথম কলেজ ডিগ্রি পেতে আমাকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অনেক সময় ভুল বিষয়ে পড়ার জন্য আমাকে অকৃতকার্যও হতে হয়েছে।’
এতগুলো ডিগ্রির পরেও একটি বিষয়ে কিন্তু ভয় রয়েছে তার। বিষয়টি হলো গণিত। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি একবার এমন একটি বিষয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম, কিন্তু শেষ করতে পারিনি। কারণ এটিতে অনেক গাণিতিক বিষয় রয়েছে, যার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়।’
এত ডিগ্রি গ্রহণ করতে গিয়ে স্বাভাবিক কারণেই পার্থিবান সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়েছেন। তিনি এখন মানুষের চেহারা মনে রাখতে পারেন না। এমনকি তিনি বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সময় দিক ভুলে যান। তবে এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন প্রফেসর পার্থিবান। তার ডিগ্রি অর্জনের এই প্রক্রিয়া তিনি চালিয়ে যাবেন এবং আরো অনেক ডিগ্রি অর্জন করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।