হিংস্র ভালুকের সঙ্গে দুদিন কাটিয়ে ক্যাসে এখন ‘বাস্তবের মোগলি’
কলকাতা টাইমস :
কেবল ভারতেই নয়, সারা পৃথিবীতেই তুমুল জনপ্রিয় রুডইয়ার্ড কিপলিং-এর ‘জাঙ্গলবুক’। ছোট্ট মোগলির জঙ্গলের পশুদের মধ্যে দিন গুজরানের রোমাঞ্চকর আখ্যান সকলেরই প্রিয়। কিন্তু কেউ কি একে গল্পগাছার বাইরে কিছু ভেবেছেন? যদিও কিপলিং-এর সেই অনুপম কল্পনাই যেন নয়া রূপ নিয়েছে ছোট্ট ছেলে ক্যাসে হ্যাথওয়ের জীবনে। ৩ বছরের খুদে এখন ফেসবুকে জনপ্রিয় ‘বাস্তবের মোগলি’ হিসেবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার বাসিন্দা ক্যাসে। গত ২২ জানুয়ারি সে নিজের প্রপিতামহের বাড়িতে গিয়েছিল বেড়াতে। সে বাড়ির প্রান্ত ছুঁয়ে ঘন জঙ্গল। কিন্তু কে ভেবেছিল ছোট্ট ক্যাসে সেই জঙ্গলে হারিয়ে যাবে সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে? গত ২২ জানুয়ারি দু’টি অন্য শিশুর সঙ্গে সে খেলা করছিল।
আচমকাই সে জঙ্গলের দিকে হাঁটতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে জানা যায় তার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারটা। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। শত শত মানুষ খুঁজতে থাকে তাকে। এখানেই শেষ নয়। সেখানে হাজির হয় হেলিকপ্টার ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর। এক হাজার একরের জঙ্গল জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালালেও কোনও সন্ধান মেলেনি ক্যাসের।
২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চেষ্টা করেও সাফল্য আসেনি। প্রচণ্ড ঠান্ডা আর বৃষ্টির মধ্যে সবাই অক্লান্ত খুঁজেও তাকে পায়নি।
এরপর তল্লাশি দলের একজন লিজা ফ্রেকার তার কুকুর নিয়ে বাড়িটির কাছেই ঘোরার সময় আচমকাই কোনও শিশুর কান্না শুনতে পান। তিনি খুঁজতে শুরু করেন। ক্রমে তিনি ও বাকিরা মিলে খুঁজে পান ক্যাসেকে।
ক্যাসে সুস্থই রয়েছে। কেবল প্রবল ঠাণ্ডার ধকলে সামান্য কাহিল। ক্যাসে জানিয়েছে, সে এই দু’দিন কোথায় ছিল। সে কথা তার কাকিমা ব্রেননা হ্যাথওয়ে ফেসবুকে লিখে পোস্টও করেন। পরে অবশ্য তিনি সেটা মুছে দেন।
কিন্তু ব্রেননা কী লিখেছিলেন সেই পোস্টে? তিনি লেখেন— ‘ক্যাসে সুস্থ, হাসিখুশিই রয়েছে। ও দিব্যি কথাবার্তা বলছে। ও জানিয়েছে, সে এই দু’দিন একটা ভালুকের সঙ্গে কাটিয়েছে! ঈশ্বর তাকে বাঁচাতে এক বন্ধু পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।’
এখানেই শেষ নয়, ব্রেননা জানিয়েছেন, ক্যাসে কার্টুন দেখতে দারুণ পছন্দ করে। তাও ‘মাশা অ্যান্ড দ্য বিয়ার’। এবার কার্টুনের দুনিয়া থেকেই বুঝি এক ভালুক এসে তার বন্ধু হয়ে গেল! হিংস্র ভালুকের সঙ্গে তিন বছরের এই খুদের কাটানো দিনগুলোর রূপকথা যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে, তা বলাই বাহুল্য।