মহিলা-শিশুর মাথার খুলি দিয়ে তৈরী ভবন, শুনেছেন কখনো!
ভবন নির্মাণে কাঠ-বাঁশ-ইট-পাথরের ব্যবহার বহু পুরনো। কিন্তু তাই বলে মানুষের মাথার খুলি দিয়ে ভবন নির্মাণের কথা আগে কেউ শোনেনি। কিন্তু এবার মেক্সিকো সিটির একটি এলাকায় প্রত্নতত্ত্ববিদেরা এমন একটি উঁচু ভবনের খোঁজ পেয়েছেন যেটি মানুষের মাথার খুলি দিয়ে নির্মিত। তাও আবার কেবল মহিলা ও শিশুদের মাথার খুলি দিয়ে নির্মিত!
জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ওই ভবনটিতে অন্তত সাড়ে ছয়শো মাথার খুলির সন্ধান পেয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, খনন যত এগুবে খুলির সংখ্যা আরও বাড়বে। ভবনের ওপরের দিকে বসানো খুলিগুলো মহিলা ও শিশুদের।
এই আবিষ্কার দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি প্রাচী আজটেক সাম্রাজ্যের নরবলীর সংস্কৃতির অংশ। খুলি-নির্মিত ভবনটির ভাঙা ভাঙা অংশ দেখে মনে হয়, এটি নলাকৃতির ছিল। এখন যেখানে মেক্সিকোর রাজধানী সেখানেই একসময় আজটেকের রাজধানী ‘টেনোকটিটলান’ ছিল, আর রাজধানীর প্রধান মন্দির ছিল ‘টেম্পলো মায়োর’।
স্পেনীয় দখলদার যোদ্ধারা এই মন্দির কাছাকাছি আরেকটি জায়গায় একসঙ্গে বিন্যস্ত এ রকম অনেক খুলি দেখে ভয় পেয়েছিলেন। কারণ সেগুলো প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগের মেসোআমেরিকান সংস্কৃতির চিহ্ন বহন করে। ইতিহাসবিদরা সে নিয়েও ভাবছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রত্নগবেষকেরা মেক্সিকো সিটির পুরনো অংশে যে খননকাজ শুরু করেছিলেন তা এখনও শেষ হয়নি।
খনন কার্য দলের জৈব নৃবিজ্ঞানী রদ্রিগো বোলানোস বলছেন, ‘মাথার খুলি দেখে প্রথমে আমরা ভাবছিলাম কোনো তরুণ যোদ্ধার দেহাবশেষ। কিন্তু পরবর্তীতে যখন আমরা মহিলা ও শিশুদের মাথার খুলি পাই তখন বুঝলাম এরা যুদ্ধে যেতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ নতুন। আমাদের কাছে এর কোনো রেকর্ডও নেই।’
কিন্তু সেখানে মহিলা ও শিশুর অনেক খুলি দেখে মানুষকে বলি দেয়া বা উৎসর্গ করার সংস্কৃতির ইঙ্গিত মেলে। আজটেক ও অন্যান্য মেসো আমেরিকান সংস্কৃতির মধ্যে সূর্যের উদ্দেশ্যে নরবলি দেয়ার রীতি ছিল। নৃবিজ্ঞানী রাউল বারেরা বলছেন, খুলিগুলো ভবনে বসানোর আগে সেগুলো দেখার জন্য হয়তো জনসম্মুখে রাখা হয়েছিল।