সামনে আরো খারাপ, বেশিরভাগ দেশই মন্দার দিকে যাচ্ছে: বিশ্বব্যাংক
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, বছর শেষের আগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বেশিরভাগ দেশেরই মন্দার জন্য প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।
বিশ্বব্যংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, অনেক দেশের জন্য মন্দা এড়ানো কঠিন হবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে প্রবৃদ্ধির নিম্নগতি বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির করেছে। এ কারণে ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক মন্দার বড় ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। যুদ্ধ, চীনের শূন্য কভিড নীতি, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ও অর্থনৈতিক ধীরগতি প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর করে দিয়েছে।
ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এ দশকজুড়ে হয়তো প্রবৃদ্ধির ধীরগতি অব্যাহত থাকবে। অনেক দেশে মূল্যস্ফীতির হার ইতোমধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে পর্যায়ে পৌঁছেছে। উৎপাদন বাড়ার গতি থমকে গেছে। মূল্যস্ফীতির এই উচ্চহার হয়ত দীর্ঘদিন ভোগাবে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ প্রতিবেদনে চলতি বছর বিশ্বের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যেতে পারে, যা ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৯ সালের অচলাবস্থার সময়ের প্রবৃদ্ধি কমার দ্বিগুণের বেশি।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, ১৯৭০ এর দশকের শেষ দিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সুদের হার বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সেই পদক্ষেপই ১৯৮২ সালে ডেকে এনেছিল মন্দা। উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছিল।
বিশ্বব্যাংক যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জন্য ১৪৯ বিলিয়ন ডলারের (১৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার) অতিরিক্ত তহবিল অনুমোদন করেছে। এ তহবিল সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবীদের মজুরি দিতে ব্যবহার করা হবে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও স্যানিটেশন সেবায় এই সহায়তা ব্যয় করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রসপেক্টস গ্রুপের পরিচালক আয়হান কোস বলেন, জ্বালানির ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ন্ত্রণে আনা কোনো সরকারের জন্য সহজ নয়। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দেয়া, ভর্তুকি বাড়ানো কিংবা বাজার নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক হবে না।