গতকালের প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে দেশ জুড়ে মৃত ৩৪, আহত বহু
নিউজ ডেস্কঃ
দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের ফলে কমপক্ষে ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহতের সংখ্যা প্রায় অর্ধশতাধিক।
রবিবার বিকালের পর থেকেই কালো মেঘে ছেয়ে যায় ভারতের রাজধানী দিল্লির আকাশ। শুরু হয় ধূলি ঝড় ও বৃষ্টিপাত। দিল্লির একাধিক জায়গায় ১০৯ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়। তাতে ২ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ১৮ জনের মতো। ঝড়ের দাপটে একাধিক জায়গায় অন্তত ১৯০ টির মতো ছোট-বড় গাছ এবং ৪০ টির মতো বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। বিপর্যস্ত সড়ক ও ট্রেন পরিষেবা। ঝড়ের দাপটে কিছুক্ষণের জন্য ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক বিমান ওঠা-নামা ব্যহত হয় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রায় ৭০ টি বিমানকে এদিন অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় এবং প্রায় ২৪ টিরও বেশি বিমান দেরীতে চলছে বলে জানা গেছে। মেট্রো পরিষেবাও বিঘ্নিত। সব মিলিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছে রাজধানীর জনজীবন।
অন্ধ্রপ্রদেশে বজ্রাঘাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলায় সাত জন এবং কাদাপা এলাকায় দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত ৩ জন। কয়েকদিন ধরেই অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার বিস্তীর্ণ এলাকায় বজ্রপাত সহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে এদিন সন্ধ্যার পর থেকে তা ভয়াবহ আকার ধারন করে। রবিবারের বৃষ্টি ও ঝড়ের দাপটে উত্তরপ্রদেশেও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত কমপক্ষে ২৮ জন। কাশগঞ্জে ৪ জন, বুলন্দশহরে ২ জন এবং কনৌজ, আলিগড়, সম্বল, গাজিয়াবাদ ও নয়ডা’য় ১ জন করে মৃত্যু হয়েছে। বাজ পড়ে কয়েকটি কাঁচা বাড়িতে আগুন ধরে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে এই রাজ্যটিতে।
পশ্চিমবঙ্গেও এদিন সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাত সহ বৃষ্টি শুরু হয়। যার ফলে এখনও পযৃন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহতের সংখ্যা ১৫। রাজ্যটির হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়ায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের, এদিন বিকালে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে চার বালকের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় দুই জন করে নিহত হয়েছে এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমস্ত রকমের সহায়তা করার পাশাপাশি যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়েছে বা ফসলের ক্ষতি হয়েছে তাদেরকেও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন রাতে মমতা জানান ‘প্রকৃতির ওপর আমাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এই দুর্যোগে যারা নিহত হয়েছেন তাদেরকে হয়তো আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবো না কিন্তু আমাদের সরকার সেই সমস্ত পরিবারের পাশে আছে এবং যতটা সম্ভব তাদেরকে সহায়তা করা হবে’।