মন-মস্তিষ্কের এই কারসাজিতেই আপনি গরিব  – KolkataTimes
February 26, 2025     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

মন-মস্তিষ্কের এই কারসাজিতেই আপনি গরিব 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :  

ম্পদ গড়ে তোলা কেবল অঙ্ক বা সংখ্যার বিষয় নয়। এটি মানসিকতার বিষয়। জ্ঞান বা মস্তিষ্কের কার্যলাপের ওপর নির্ভর করেই মানুষ বেশি ব্যয় বা কম সঞ্চয় করে। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে এর কারণেই। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো আমরা সবাই এদের বিরুদ্ধে কোনো ক্ষমতাই রাখি না। এখানে দেখে কগনিটিভ প্রভাব বা গোঁড়ামির কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য যা আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করে।

১. টাইম ডিসকাউন্টিং : বসন্তে কয়েক দিনের ছুটি কোনো রিসোর্টে কাটিয়ে দেওয়ার চিন্তাটাই আগে মাথায় আসে। কিন্তু তখন ছুটি কাটানোর ব্যয়টাকে সঞ্চয় করার চিন্তা কাজ করে না। অথচ এই সঞ্চয় মানুষকে একটু দেরি করে ব্যাপক তৃপ্তি দেয়। মস্তিষ্কের টাইম ডিসকাউন্টিং বিলম্বিত তৃপ্তির বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি তাৎক্ষণিক পুরষ্কারে বিশ্বাসী।

২. সিরসাকার ইল্যুশন : একে বেশ আন্দদায়ক শোনা যায়। অর্থব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একে ব্যাঙ্গাত্মক অর্থেই ব্যবহৃত হয়। অর্থ বিষয়ে আমরা নিজেদের সিদ্ধান্তকে ফিনানসিয়াল অ্যাডভাইজর বা বিনিয়োগ অ্যালগোরিদমের মাধ্যমে যাচাই করতে চাই। অথচ নিজের পয়সার বিষয়ে আপনি ছাড়া অন্য কেউ কখনোই বেশি জানবেন না।

৩. অ্যাঙ্করিং বায়াস : একে ফাঁদ বলা যায়। অ্যাঙ্করিং ব্যাখ্যা করে যে, মানুষ পার্কিং লটে ২০ টাকার বিনিময়ে এক ঘণ্টা গাড়ি রাখার পরিবর্তে রাস্তার ওপাশে ৩০ টাকায় আরো বেশি সময় গাড়ি রাখার বিষয়টিকে লাভজনক প্রস্তাব বলে মনে করে। আসলে উচ্চ মাত্রার অ্যাঙ্কর মানুষকে আরেকটু বেশি অর্থ খরচে উৎসাহ দেয়।

৪. ডেনোমিনেশন ইফেক্ট : একটা ১০০ টাকার নোট ভাঙাতে মন চায় না। কিন্তু একটা পঞ্চাশ, দুটা বিশ টাকার নোট ও দুটো পাঁচ টাকার নোট ভাঙাতে খারাপ লাগবে না আপনার।

৫. অস্ট্রিচ ইফেক্ট : বলা হয়, অস্ট্রিচ কিছুকে ক্ষতি মনে করলে বালিতে মুখ লুকায় হুমকিকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। মানুষের মাঝেও এই প্রচণতা রয়েছে। যখন অর্থ বিষয়ে খবর খারাপ আসে, তখন মানুষ ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ বা বিলের কথা শুনতে চায় না।

৬. অতি আত্মবিশ্বাস : ‘থিঙ্ক লাইক এ ফ্রিক’ বইয়ের লেখক স্টিভেন ডাবনার বলেন, অর্থ বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা সেরা যে কাজটি করেন তা হলো, যা জানেন না সে বিষয়গুলোকে গ্রহণ করে নেওয়া। তবে অনেকেরই এ ধরনের বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে মৌলিক পরামর্শ পাওয়ার জন্য আমাদের কোনো পরামর্শদাতা থাকে না।

৭. প্লানিং ফ্যালাসি : একটি নির্দিষ্ট কাজ কতটুকু সময় নিতে পারে, সে বিষয়টাকে গুরুত্ব না দিতে প্রভাবিত করে প্লানিং ফ্যালাসি। জটিল বিষয় হলো, এখানে অনেক কিছুই মানুষের পরিকল্পনায় থাকে না। ফলে আশানুরূপ ফল মেলে না।

৮. হারানোর ভয় : সবাই অর্থ খোয়ানোকে ভয় করে। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকে আবার অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি ভয় করেন। কোনো বিষয়ে বিনিয়োগ করতে গেলে অনেকের মনে গোটা অর্থ খোয়ানোর ভয় ঘাড়ে চাপে।

৯. ক্রয় পরবর্তী যৌক্তিকতা : যদি কোনো জিনিস কেনার পর আমাদের কাছে তা সঠিক ক্রয় বলেই মনে হয়। কিন্তু কেনার পর তা পছন্দ না হলে মনে হয়, অর্থটাই জলে গেলো। আসালে যার পেছনে অর্থ খরচ করা হয় তা নিয়ে তুষ্ট থাকাই ভালো।

১০. দীর্ঘসূত্রিতা : দীর্ঘ সময় ব্যয়ের কারণে অর্থে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। একটি ক্রেডিট কার্ড করতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করলে অনেক অফার হারাতে পারেন। খুব বেশি দেরি করলে খরচের পরিমাণ বাড়তে পারে।

১১. বায়াস ব্লাইন্ড স্পটস : এটা সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব। আমরা কেউ আমাদের এই মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলো বুঝতে পারি না।

১২. রেসট্রেইন্ট বায়াস : আত্ম-নিয়ন্ত্রণে আমাদের সক্ষমতা নিয়ে খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠি আমরা।

১৩. ওনারশিপ ইফেক্ট : আমাদের মালিকানাধীন জিনিসগুলোকে আমরা ভালোবাসি। বাজারে একটি আসবাব দেখলেন। এটা দেখে নিজের বাড়িতে শোভা পাচ্ছে বলে চিন্তা করতে থাকলেন। এতে উত্তেজনা চড়বে। তখন একে পেতে আপনি অনেক বেশি দাম দিতে প্রস্তুত থাকবেন।

১৪. স্ট্যাটাস কুয়ো বায়াস : এর প্রভাবে আমরা যা জানি তার সঙ্গে লেগে থাকত চাই। এটা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত হোক বা না হোক।

১৫. সাঙ্ক কস্ট ফ্যালাসি : ‘আমি ইতিমধ্য দাম দিয়ে ফেলেছি, কাজেই অর্ডার বাদ দেওয়া যাবে না।’ এটা এমনই বৈশিষ্ট্যের নামান্তর। কোনো সেবা পান বা না পান, অর্থ দিয়ে ফেললে বিষয়টি আপনার সিদ্ধান্তকে আর প্রভাবিত করতে পারে না।

Related Posts

Leave a Reply